কবি নজরুল ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থটি বঙ্গবন্ধুর নামেই হয়তো উৎসর্গ করতেন: ঢাবি উপাচার্য

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তীর আয়োজনে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। ঢাকা, ২৫ মে
ছবি: প্রথম আলো

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থ অগ্নিবীণা ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয়। কবি বইটি উৎসর্গ করেছিলেন ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতাসংগ্রামী বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে। তবে সমসাময়িক সময়ে যদি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থাকতেন, তাহলে নিঃসন্দেহে কবি নজরুল এই কাব্যগ্রন্থ বঙ্গবন্ধুর নামেই হয়তো উৎসর্গ করতেন বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

নজরুল জন্মজয়ন্তীর এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ: বঙ্গবন্ধুর চেতনায় শাণিত রূপ’। ১৮৯৯ সালের ২৫ মে বর্তমান ভারতের বর্ধমানের চুরুলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন নজরুল।

কবি নজরুলের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, নজরুলের জীবনের উৎকৃষ্ট সময়ে লেখা ১২টি অনবদ্য কবিতা নিয়েই ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। সেটি তাঁকে অমর করে রেখেছে।

উপাচার্য বলেন, ‘কবি নজরুল তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থটি যাঁকে উৎসর্গ করেছেন, সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ সেই বারীন্দ্রকুমার ঘোষ ছিলেন তৎকালীন সমগ্র ভারত ও বাংলার মহানায়ক। সমসাময়িক সময়ে যদি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিব থাকতেন এবং তাঁর বয়স যদি ওই রকম হতো, যেটি তাঁর হয়েছিল চল্লিশের দশকে; চল্লিশের দশক থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু যে অসাধারণ অবদান রেখেছেন, তাহলে নিঃসন্দেহে কবি নজরুল এই কাব্যগ্রন্থটি বঙ্গবন্ধুর নামেই হয়তো উৎসর্গ করতেন। ’

উপাচার্য বলেন, একটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি এবং একটি জাতির মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু যে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন এবং যে অর্জন, সেটি বিবেচনায় নজরুল নিঃসন্দেহে তাঁর মধ্যেই এই কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গ করার যে গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্য, তা খুঁজে পেতেন।

উপাচার্য আখতারুজ্জামান আরও বলেন, ‘কবি নজরুলের মর্মবাণী হলো একটি অসাম্প্রদায়িক, মানবিক সাম্যের সমাজ। সেটি প্রতিষ্ঠা করার অবারিত প্রয়াস আমাদের রাখতে হবে। সেটি এই জাতি ধারণ করছে। কিন্তু এটি ঠিক যে কখনো কখনো এর ছন্দপতনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।’

এর আগে নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সকালে ক্যাম্পাসের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা নিয়ে জাতীয় কবির সমাধিতে যান শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতিহা পাঠ করেন তাঁরা। এরপর উপাচার্যের সভাপতিত্বে সমাধি প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তীতে সকালে তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাষ্ট্রীয় সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। কবির পরিবারের পক্ষ থেকেও সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়৷