আদালতের রায়
বিএনপির আরও ৩০ জনের সাজা
গত সাড়ে তিন মাসে ৪৯টি মামলায় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ৭৬৮ নেতা-কর্মীর সাজা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক মাস আগে পৃথক চারটি মামলায় গতকাল সোমবার আদালতের রায়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের আরও ৩০ নেতা–কর্মীর সাজা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় তাঁদের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
২০১৩, ২০১৬ ও ২০১৮ সালের মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ, রামপুরা, ধানমন্ডি ও মুগদা থানায় চারটি মামলা হয়। এসব মামলায় বেআইনি সমাবেশ, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, যানবাহনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয় বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে। আদালতের রায়ে গতকাল যাঁদের সাজা হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগ থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা–কর্মী।
এ নিয়ে গত সাড়ে তিন মাসে ৪৯টি মামলায় বিএনপির ৭৬৮ নেতা–কর্মীর সাজা হলো।
হাজারীবাগের মামলা
পুলিশের করা মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর হাজারীবাগের ১৫ নম্বর স্টাফ কোয়ার্টার সড়কের নিউ ভাই ভাই হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সামনে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা–কর্মীরা সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করার জন্য গোপন বৈঠকে মিলিত হন। খবর পেয়ে হাজারীবাগ থানার এসআই আল মোমেনসহ অন্যরা সেখানে গেলে নেতা–কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এ ঘটনায় ৫১ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয় ২০ জনকে। এর মধ্যে চারজন পুলিশ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ।
মামলার রায়ে আদালত ১৩ জনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। গতকাল ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ এ রায় দেন।
রামপুরা থানার মামলা
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস আগে রামপুরা থানায় বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় পুলিশ বলেছে, ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে মালিবাগ সুপারমার্কেটের সামনে বিএনপির ১০০ থেকে ১৫০ নেতা–কর্মী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল করছিলেন। তাঁদের হাতে ছিল রড, ধারালো অস্ত্র, ইটপাটকেল ও ককটেল।
এ মামলায় পুলিশ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। মামলার ১৪ সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ৪ পুলিশ সদস্যকে আদালতে হাজির করে। গতকাল রায়ে ১৪ জনকে দুই বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল ইসলাম এ রায় দেন।
ধানমন্ডি ও মুগদা থানার মামলা
২০১৬ সালের ১১ মে ধানমন্ডি থানায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা একটি মামলায় গতকাল দুজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল ইসলাম।
অন্যদিকে ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর মুগদা থানায় বাসে আগুন দেওয়ার একটি মামলায় একজনকে তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ রায় দেন।
নেতা–কর্মীদের সাজা হওয়ার বিষয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের করা এসব মামলায় আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না নেতা–কর্মীরা।