বারবার ‘আমি পুলিশ’ বলার পরও এসআই ইউসুফকে হেনস্তা করছিল ‘মব’
চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘মব’ (দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা) তৈরি করে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ইউসুফ আলীকে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনার একাধিক ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়েছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের বেলায় একটি লাল রঙের চেয়ারে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) ইউসুফকে ঘিরে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। তাঁর পরনে পুলিশের পোশাক। তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা করছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। উচ্ছৃঙ্খল জনতা তাঁর দুই হাত এমনভাবে শক্ত করে ধরে রেখেছে, যাতে তিনি নড়াচড়ার ক্ষেত্রে খুব একটা সুবিধা করতে না পারেন। পেছন দিক থেকে একজনকে তাঁর চুল ধরে টানতে দেখা যায়। কেউ তাঁর পোশাক খুলে ফেলতে বলছিল। কেউ তাঁর প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে তল্লাশি করছিল। তাঁর মুঠোফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যেতে দেখা যায় উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে।
ইউসুফ বারবার চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমি পুলিশ। আমি পতেঙ্গা থানার পুলিশ।’
কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল জনতা ইউসুফের কথা মানতে চাচ্ছিল না। তারা তাঁকে ‘ভুয়া’ বলছিল। উচ্ছৃঙ্খল জনতার মধ্যে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘ভালো করে ভিডিও কর।’
আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পতেঙ্গায় ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘মব’ তৈরি করে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ইউসুফকে মারধরের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মোট ১২ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ত্রাস সৃষ্টি করে এসআই ইউসুফকে হেনস্তাসহ তাঁর মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও ওয়াকিটকি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত। তাঁরা মাদক সেবন ও ছিনতাইয়ে জড়িত।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘটনার দিন মব সৃষ্টিকারী দুজনকে তৎক্ষণাৎ পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। এর আগে খবর পেয়ে সৈকত এলাকায় টহলরত পতেঙ্গা থানার পুলিশের একটি দল ও আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে এসআই ইউসুফকে উদ্ধার করেন। গত শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে (১২ জন) গ্রেপ্তার করা হলো।
এসআই ইউসুফকে হেনস্তার ঘটনায় পতেঙ্গা থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা হয়েছে। কেউ যেন আইন নিজ হাতে তুলে না নেয়, সে জন্য সবাইকে সতর্ক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মবের প্রতিটি ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে সরকার বদ্ধপরিকর।