রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর আগে পাবনায় ঘুরছে ‘পারমাণবিক বাস’
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের চুল্লিপাত্রে পারমাণবিক জ্বালানি প্রবেশ করানো শুরু হতে পারে। এর আগে স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পাবনার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছে ‘পারমাণবিক বাস’। এ বাসে করে ঘুরে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে বিভ্রান্তি দূর করছে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ রোববার এটি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত করপোরেশন রোসাটম যৌথভাবে প্রকল্প এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিজ্ঞান উৎসব পরিচালনা করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্ন প্রশ্ন, ভুল ধারণা, উদ্বেগ ও কৌতূহলের সঠিক ও তথ্যভিত্তিক উত্তর প্রদান করাই এ কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য।
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বলছে, চলমান বিজ্ঞান উৎসবের অংশ হিসেবে রোসাটম ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিনিধিরা একটি নান্দনিক পারমাণবিক থিমে ব্র্যান্ডিং করা বাসে করে বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করছেন। এ বাসের নাম দেওয়া হয়েছে পারমাণবিক বাস। যাত্রাপথে তাঁরা বিভিন্ন জনসমাবেশে অংশ নিয়ে মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। পাবনা জেলার সব উপজেলার মানুষ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা, পরিবেশগত দিক, প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য ও সামাজিক-অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারছেন।
বিজ্ঞপ্তি বলছে, মাসব্যাপী সচেতনতা কর্মসূচির আওতায় পাবনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিজ্ঞান উৎসব, গম্ভীরা পরিবেশনা এবং উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। টেকসই, নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র—এই প্রতিপাদ্যে গম্ভীরা পরিবেশনার মাধ্যমে বিনোদনের পাশাপাশি যুক্তিনির্ভর উপস্থাপনায় রূপপুর প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। উঠান বৈঠকের লক্ষ্য হলো, স্থানীয় জনগণকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে জানানো, সরাসরি আলোচনায় যুক্ত করা, তাদের প্রশ্নের সঠিক ও তথ্যভিত্তিক উত্তর প্রদান, উদ্বেগ ও শঙ্কা দূর করা এবং প্রকল্পের পক্ষে ইতিবাচক জনমত গড়ে তোলা।
এ ছাড়া জনগণের আগ্রহ বাড়াতে বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক খেলাধুলার আয়োজন করা হচ্ছে এবং দর্শকদের মধ্যে পারমাণবিক থিমের স্মারক সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এর বাইরে সম্প্রতি ঈশ্বরদী পারমাণবিক তথ্যকেন্দ্র এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ যৌথভাবে পারমাণবিক প্রযুক্তিবিষয়ক বিতর্ক ও প্রশ্নোত্তরপর্বের আয়োজন করে।
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পাবনার রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরমাণু শক্তি কমিশন। এ প্রকল্পের আওতায় ঠিকাদার হিসেবে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট।