তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের মৃত্যু নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদ

তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর
ফাইল ছবি

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ২০১১ সালের ১১ আগস্ট সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ পাঁচ চলচ্চিত্রকর্মী নিহতের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুল হকের অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন নাহিদ মাসুদ, ক্যাথরিন মাসুদ, দিলারা বেগম, ঢালী আল মামুন, মনিস রফিক, মো. সাইদুল ইসলাম সাঈদ ও মঞ্জুলী কাজী।

গতকাল রোববার লিখিত প্রতিবাদে তাঁরা বলেন, ‘আমরা ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত চলচ্চিত্রকর্মীদের স্বজনেরা ক্ষুব্ধ, আশ্চর্য ও মর্মাহত। এক দশক পরে, এ ব্যাপারে আদালতে একটি মামলার রায় নিষ্পত্তি হওয়ার পর ও একটি মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় বুয়েটের শিক্ষক শামসুল হক ও তাঁর সহযোগীরা তাঁদের ভাষায় একটি “বিজ্ঞানসম্মত” ব্যাখ্যা দিয়ে বলছেন, বাসের চালক নয়, একটি ভ্যানচালক ও চলচ্চিত্রকর্মীদের গাড়ির চালক ভুল দিকে ছিলেন বলে সংঘর্ষ ঘটে। আমরা তাঁর মনগড়া ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করছি।

দুই বছর আগেও তিনি এ নিয়ে আলোচনা সভা ও অনলাইন মিডিয়ায় তাঁর মত প্রকাশ করেছেন। আমরা তখন কোনো জবাব দিইনি। কারণ, যা সত্য, তা অনেক আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি তিনি একই ধরনের কথা আবার বলে শুধু নিজের প্রচার নয়, উচ্চপর্যায়ের সরকারি ও ক্ষমতাসীন দলের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যেও উসকানি ছড়াচ্ছেন।

কর্তাব্যক্তিদের একজন এমন মন্তব্য করেছেন, যা শুধু আমাদের কেন, আইনের শাসনব্যবস্থার প্রতিই বৃদ্ধাঙ্গুলির প্রদর্শন। আমরা মনে করি, এমন একজন ব্যক্তিবিশেষের মতবাদকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বাসমালিক ও শ্রমিকনেতাদের মতো স্বার্থান্বেষী মহলের মদদপুষ্ট।’

তাঁরা বলেন, ‘ঘটনাস্থলের যে ছবি, ভিডিও চিত্র ও অডিওর কথা তিনি উল্লেখ করছেন, এর সবই দুর্ঘটনার দিন থেকে জনগণের কাছে উন্মুক্ত। দুর্ঘটনাস্থলে কোনো সিসিটিভি ছিল না, কাজেই ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শী ও গাড়ির জীবিত যাত্রীরাই প্রকৃত ঘটনার সবচেয়ে সুনির্দিষ্ট বর্ণনা দিতে পারবেন। অধ্যাপক হকের তথাকথিত বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ, তাঁর প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি একটি ধারণা মাত্র। তাঁর কাছে যদি তথ্য থেকেও থাকে, তবে তা বড়জোর আংশিক। কারণ, তিনি গাড়ির কোনো যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেননি। মামলা চলাকালে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথাও ভাবেননি আর মামলার বিবাদীপক্ষও তাঁকে সাক্ষীর তালিকায় যুক্ত করেনি। এ ছাড়া জীবিত সাক্ষীদের আদালতে জবানবন্দিতে আমরা যা দেখেছি, তাই বলেছি। মাইক্রোবাস বাম লেনেই ছিল। ওই ভয়ানক মুহূর্তটি আমরা কখনো ভুলব না।’