দুই বছরের শিল্পকলা পদক গ্রহণ করলেন গুণীজনেরা

অতিথিদের সঙ্গে শিল্পকলা পদক পাওয়া গুণীজনেরা। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে
ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ ছিল শিল্পকলা পদক প্রদানের আনুষ্ঠানিক আয়োজন। অবশেষে ২০১৯ ও ২০২০ সালে শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদান রাখায় ১৮ জন গুণী শিল্পী ও দুই সংগঠনকে পদক তুলে দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শিল্পকলা পদক ২০১৯ ও ২০২০’ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। বিকেলে জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ সময় রাষ্ট্রপতির পক্ষে শিল্পীদের হাতে পদক তুলে দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

২০১৯ সালে শিল্পকলা পদক পেয়েছেন নাট্যকলায় মাসুদ আলী খান, কণ্ঠসংগীতে হাসিনা মমতাজ, চারুকলায় আবদুল মান্নান, চলচ্চিত্রে অনুপম হায়াৎ, নৃত্যকলায় লুবনা মারিয়াম, লোকসংস্কৃতিতে শুম্ভু আচার্য্য, যন্ত্রসংগীতে মনিরুজ্জামান, আলোকচিত্রে এম এ তাহের, আবৃত্তিতে হাসান আরিফ ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে ছায়ানট।

২০২০ সালের শিল্পকলা পদক পেয়েছেন নাট্যকলায় মলয় ভৌমিক, কণ্ঠসংগীতে মাহমুদুর রহমান বেণু, চারুকলায় শহিদ কবীর, চলচ্চিত্রে শামীম আখতার, নৃত্যকলায় শিবলী মহম্মদ, লোকসংস্কৃতিতে শাহ আলম সরকার, যন্ত্রসংগীতে মো. সামসুর রহমান, আলোকচিত্রে আ ন ম শফিকুল ইসলাম স্বপন, আবৃত্তিতে ডালিয়া আহমেদ ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে দিনাজপুর নাট্যসমিতি।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, শিল্পীর কদর ছাড়া শিল্পের বিকাশ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। যে জাতি এটি করেছে, সে জাতির শিল্প-সংস্কৃতি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে। আমি পদকপ্রাপ্ত গুণী শিল্পীদের অভিনন্দন জানাই। শিল্পীদের সুকুমারবৃত্তির চর্চা ও কর্মমুখরতায় ঋদ্ধ হোক বাংলাদেশ।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে সাধারণ মানুষ এখন রাজধানীর বাইরে থেকেও এখন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড উপভোগ করতে পারছেন। ঢাকার বাইরের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীদের সম্মানিত করতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা চালু করা হয়েছে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘বাংলা সংস্কৃতির রূপ, রস, গন্ধ স্বতন্ত্র ও ভিন্ন। একটি জাতির টেকসই উন্নয়নের জন্য সৃজনশীল ও মননশীল মানুষের ভূমিকা অপরিসীম। আজ এমন মানুষদের পুরষ্কৃত করতে পেরে আমরা গর্বিত।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। তিনি বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে একদিকে যেমন গুণী শিল্পীদের কৃতিত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হয়, অন্যদিকে আমাদের জীবনঘনিষ্ঠ সংস্কৃতি চর্চা, উন্নয়ন এবং বিকাশের গতি ত্বরান্বিত হয়।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন সংস্কৃতিসচিব মো. আবুল মনসুর। অতিথিদের বক্তব্য ও পদক প্রদানের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা।

শিল্পকলা একাডেমির নীতিমালা অনুযায়ী ১৬ সদস্যের কমিটি প্রতিবছর পদকের জন্য গুণীজন নির্বাচন করেন। শিল্পকলা পদকের জন্য মনোনীত ব্যক্তিদের দেওয়া হয় একটি স্বর্ণপদক, সনদ ও এক লাখ টাকার চেক। গুণীজনদের সম্মান ও স্বীকৃতি জানাতে ২০১৩ সাল থেকে শিল্পকলা পদক দিয়ে আসছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।