কলাবাগানে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ফারদিনের জামিন হয়নি

ফারদিন ইফতেখার ওরফে দিহান
ফাইল ছবি

রাজধানীর কলাবাগানে ইংরেজি মাধ্যম পড়ুয়া স্কুলছাত্রীকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ছাত্রীটির বন্ধু ফারদিন ইফতেখার দিহানের জামিন হয়নি। জামিনসংক্রান্ত তাঁর করা আপিল বুধবার নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। ফারদিন ইফতেখারকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।

২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কলাবাগান থানায় ফোন করে জানায়, এক তরুণ এক কিশোরীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এনেছেন। কিশোরীর শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। কলাবাগান থানার পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ফারদিন ইফতেখার ওরফে দিহানকে আটক করে। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ফারদিন ইফতেখার কারাগারে আছেন।

বিচারিক আদালতে জামিন চেয়ে ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর বিফল হন ফারদিন। এর বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন চান ফারদিন। আদালতে জামিন আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা চাঞ্চল্যকর ওই মামলায় ইতিমধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। এ মুহূর্তে জামিন আবেদন বিবেচনার সুযোগ নেই উল্লেখ করে হাইকোর্ট ফারদিনের জামিন না মঞ্জুর করে জামিন আবেদনসংবলিত আপিলটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। আসামি দুই বছর ধরে কারাগারে। তাই হাইকোর্ট মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–৭–কে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ইংরেজি মাধ্যম পড়ুয়া স্কুলশিক্ষার্থীর সঙ্গে আসামি ফারদিনের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে মেসেঞ্জারে নিয়মিত কথা হতো। পরিচয়ের পর পরের বছরের ৬ জানুয়ারি ফারদিন মেসেঞ্জারে কিশোরীকে পরদিন তাঁদের বাসায় আসতে প্ররোচিত করেন।

ফারদিন ইফতেখার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ‘সাধারণত দিনের বেলায় বাসা ফাঁকা থাকে। সেদিন (৭ জানুয়ারি) আমার বাবা ও বড় ভাই রাজশাহীতে থাকেন। মেজ ভাই সকাল আটটায় বাসা থেকে বের হন। মা বগুড়ার উদ্দেশে সকাল ১০টায় বের হয়ে যান। আমি ১১টার দিকে তাকে (কিশোরী) ফোন দিয়ে বলি, গৃহকর্মী চলে গেলে ফোন দেব।’

মামলার তথ্য অনুযায়ী, গৃহকর্মী বাসা থেকে চলে যাওয়ার পর ফারদিন ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে ফোন দিয়ে কিশোরীকে বাসার বাইরে আসতে বলেন। কিশোরী বাসা থেকে বের হওয়ার পর ফারদিন তাকে বাসায় নিয়ে আসেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি ফারদিন কিশোরীর মেসেঞ্জারে ৬ জানুয়ারি একটি অশ্লীল ভিডিও পাঠান। তাঁকে ফুসলিয়ে ফারদিন ওই দিন নিজের বাসায় এনে ধর্ষণ করে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যা করেন। ময়নাতদন্তের বিবরণে একটি নৃশংস ধর্ষণ ও ধর্ষণের ফলে ভিকটিমের মৃত্যুর বিষয়টি প্রমাণ করে।