বাংলাদেশের প্রয়োজনে ভারত সব সময় পাশে থেকেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের ৫২ বছর পূর্তি উপলক্ষে সেমিনারে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

ভারতকে বাংলাদেশের শর্তহীন অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, এই বন্ধুত্ব এখনো বিদ্যমান, বাংলাদেশের প্রয়োজনে ভারত সব সময় পাশে থেকেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরাজমান এই সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের ৫২ বছর পূর্তি উপলক্ষে যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম বজলুর রহমান ফাউন্ডেশন।

সেমিনারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭২ সালের ১২ মার্চ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করেন। পৃথিবীর ইতিহাসে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারের এ ঘটনা বিরল। এটি বঙ্গবন্ধুর বিশাল ব্যক্তিত্ব ও দূরদর্শিতার বহিঃপ্রকাশ। বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়েছিল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারতীয় সেনারা বাংলাদেশিদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। ভারতীয় সেনারা সরাসরি যুদ্ধ করেছেন। এক-দুজন নয়, ১ হাজার ৬৬৮ সেনা আত্মাহুতি দিয়েছেন। এটা তাঁদের নিজ দেশের জন্য নয়, পাশের দেশের জন্য। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র সরবরাহ এবং ১ কোটি মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তাঁদের স্যালুট ও ধন্যবাদ জানাই।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতের অনেক সৈন্য জীবন দিয়েছেন। দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিরাজমান মৈত্রীর এই বন্ধন চিরদিন অটুট থাকবে। জাতির পিতার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অসাধারণ দক্ষতার কারণেই অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করা হয়। এর মাধ্যমে আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পর্ব সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হই।’

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের ঘটনা দুই দেশের বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ভারত ও বাংলাদেশের এই সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতা বর্তমানে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব সব সময় বজায় থাকবে।

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর প্রতীক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আশফাক হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সেনা সদর দপ্তরের কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল মো. মজিবুর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) সীতেশ চন্দ্র বাছার।