যুব ও নারীরাই যখন এসডিজি চ্যাম্পিয়ন
শেষ হলো দুই মাসের মহাযজ্ঞ। ‘এসডিজি: যুব ও নারীদের বলিষ্ঠ প্রতিনিধিত্বের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক প্রচারাভিযান রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম হয়ে ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় সমাবেশ। রাজধানীর কেআইবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সমাবেশে দেশের ৬৪ অঞ্চল থেকেই যুব ও নারীরা অংশ নেন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি, চা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসডিজির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি আবাসিক প্রতিনিধি ভ্যান গুয়েন ও বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য সাজেদা সাথী। তারুণ্যের অংশগ্রহণ ছাড়া এসডিজি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় বলে মত দেন বিশিষ্টজনেরা।
দুই মাসব্যাপী এই প্রচারাভিযানে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের (এসডিজি) সুনির্দিষ্ট ছয়টি গোল নিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এগুলো হচ্ছে এসডিজি–৫ (জেন্ডার সমতা), এসডিজি–৮ (শোভন কাজ), এসডিজি–১০ (বৈষ্যম্য দূরীকরণ), এসডিজি–১৩ (জলবায়ু পরিবর্তন), এসডিজি–১৪ (জলজ জীবন), এসডিজি–১৫ (স্থলজ জীবন)।
দুই মাসের এ যাত্রায় আমরা সারা দেশ থেকে খুঁজে পেয়েছি ১ হাজার ২০০ জনের বেশি যুব ও নারী, যাঁরা এসডিজি বাস্তবায়নে কাজ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এসডিজির সুনির্দিষ্ট ছয়টি গোলের বিষয়ে তরুণ ও নারী প্রতিনিধিদের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এবং এসডিজি বাস্তবায়নে তাঁদের বলিষ্ঠ শপথ জানান দেয়, বাংলাদেশ এমডিজির মতোই এসডিজি বাস্তবায়নেও পিছিয়ে থাকবে না। এই তরুণেরাই একেকজন এসডিজি চ্যাম্পিয়ন।
বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিটি সমাবেশে ছিল এসডিজি নিয়ে র্যালি, আলোচনা সভা, মুক্ত আলোচনা, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এর বাইরে এই প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ৬টি রেডিও অনুষ্ঠান, ৬টি প্রামাণ্যচিত্র, ৬টি শিক্ষামূলক ভিডিও, ১২টি ছবিগল্প, ১০ বিশেষজ্ঞের মতামতসহ ১০টি ভিডিও বার্তা দুই মাস ধরে প্রচারিত হয় অনলাইন মাধ্যমে। সাত লক্ষাধিক মানুষ সেগুলোতে যুক্ত হন, তাঁদের মত প্রকাশ করেন।
জাতীয় পর্বের আয়োজনে সারা দেশ থেকে ৩৪১ জন এসডিজি বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, যাঁদের মধ্য থেকে সেরা তিনটি রচনার তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। আয়োজন করা হয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার, যার প্রতিটি পর্ব অনলাইন মাধ্যমে সরাসরি উপভোগ করেন কয়েক হাজার মানুষ। আন্তবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিক দল। এ ছাড়া এসডিজিবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জিতে নেন সাত শিক্ষার্থী। সবশেষে জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা নামে দুই মাসব্যাপী এই প্রচারাভিযানের।
জাফর সাদিক
সাধারণ সম্পাদক, বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ