দেশসেরা বাংলাবিদ সামিরা মুকিত
বাংলা ভাষায় নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে সেরা বাংলাবিদ নির্বাচিত হলো সিলেটের মেয়ে সামিরা মুকিত চৌধুরী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়।
এবার পঞ্চমবারের মতো আয়োজন করা হয় ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ প্রতিযোগিতার। সারা দেশের দেড় লাখের বেশি প্রতিযোগী এতে অংশ নেয়। এর মধ্য থেকে চূড়ান্ত পর্বে সেরা ছয় প্রতিযোগীর লড়াইয়ের পর বিজয়ী বাছাই করেন বিচারকেরা।
সেরা বিজয়ী সামিরা সিলেটের হোমল্যান্ড আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অণুশ্রী বণিক দ্বিতীয় এবং ঢাকা বিভাগের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মনামী জামান তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
প্রথম হওয়ায় সামিরা পেয়েছে ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। দ্বিতীয় স্থান অধিকারী অণুশ্রী বণিক ৩ লাখ টাকার এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী মনামী জামান পেয়েছে ২ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি।
চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়া অন্য তিন প্রতিযোগীরা হলো ঢাকা বিভাগের মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের এস এম রাইয়ান তাওসীফ, ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জিলা স্কুলের সাদাত আশরাফী নাইব ও রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের দীপায়ন সরকার।
এ ছয়জন ছাড়াও দেশসেরা আরও চারজন—সামিহা সালসাবিল খান, আশিফা আনজুম, নুযহাত ইসলাম ও মো. নাযিল রাহমান প্রত্যেকে পেয়েছে একটি ল্যাপটপসহ ব্যক্তিগত পাঠাগার করার জন্য ৫০ হাজার টাকা সমমূল্যের বাংলা বই ও বই রাখার আলমারি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সেরা ছয় প্রতিযোগী সম্পর্কে তথ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, মা–বাবারা একটু সচেতন থাকলে বিদ্যালয়ে পাঠশালা চালু ও ভালো থাকলে শিশুরা ভালো শিক্ষা পায়।
এর আগে যারা সেরা বাংলাবিদ হয়েছিল, তাদের বাংলা বিষয়ে জ্ঞান দেখে অবাক হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর।
ইস্পাহানি টি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ওমর হান্নান বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে যাত্রা শুরু হওয়া বাংলাবিদ অনুষ্ঠানটি পঞ্চম বর্ষ সম্পন্ন করল। করোনা মহামারির সময় বন্ধ ছিল। মহামারির পর এই প্রথম আয়োজনে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি।’
অনুষ্ঠানে সেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান ইস্পাহানি, পরিচালক জাহিদা ইস্পাহানি ও ইমাদ ইস্পাহানি।
চূড়ান্ত পর্বে বিচারক হিসেবে ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর, দৈনিক কালের কণ্ঠ–এর প্রধান সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ত্রপা মজুমদার। এ ছাড়া অতিথি বিচারক ছিলেন বরেণ্য অভিনেতা আফজাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে একসঙ্গে গান পরিবেশন করেন সামিনা চৌধুরী ও ফাহমিদা নবী। এ ছাড়া বাংলা ভাষার প্রাচীনকাল থেকে আধুনিককালের পথপরিক্রমার ওপর ‘বাংলা ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক নৃত্য–আলেখ্য পরিবেশনা করেন নৃত্যশিল্পী প্রিয়াঙ্কা আনাম।