বেসিক ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে করা পৃথক মামলায় ব্যাংকের চার সহকারী মহাব্যবস্থাপককে (এজিএম) ছয় সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগাম জামিন চেয়ে তাঁদের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

চার কর্মকর্তা হলেন বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের এজিএম সাদিয়া আক্তার শাহীন ও মো. জালাল উদ্দিন, গুলশান শাখার এজিএম রুমানা আহাদ এবং মতিঝিল লোকাল অফিসের এজিএম এ এস এম আনিসুর রহমান। এর আগে ‘বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি অনেকেই পালিয়ে গেছেন’ শিরোনামে গত ১৪ জুন একটি সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৫৯টি মামলার অভিযোগপত্র প্রস্তুত হয়েছে। অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে ব্যাংক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সার্ভেয়ার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নাম উল্লেখ করা হয়।

প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০টি মামলায় আগাম জামিন চেয়ে চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করেন ওই চার কর্মকর্তা। ২০ মামলার মধ্যে সাদিয়া আক্তার ২০টিতে, রুমানা আহাদ ১৩টিতে এবং জালাল উদ্দিন ও আনিসুর রহমান ১৮টি মামলায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। জামিন আবেদন গতকাল শুনানির জন্য উঠলে দুদকের আইনজীবী জানান, অভিযোগপত্র হয়ে গেছে। হাইকোর্ট দুদকের আইনজীবীকে মামলার অভিযোগপত্র আজ উপস্থাপন করতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় অভিযোগপত্র উপস্থাপন করা হয়। আগাম জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় আজও চার কর্মকর্তা আদালতে হাজির হন।  

আদালতে জামিন আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম মাছুম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাহিয়ান ইবনে সোবহান ও মো. ফরহাদ বিন হুসাইন। দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও আইনজীবী আসিফ হাসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে ছিলেন।

আরও পড়ুন

শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেন, অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল হয়ে গেছে। এ পর্যায়ে আগাম জামিন চাওয়ার সুযোগ নেই। অন্যদিকে আগাম জামিনের আরজি জানিয়ে এ এম মাছুম বলেন, অভিযোগপত্র এখনো গ্রহণ করেননি। কিছু মামলার অভিযোগপত্র এখনো দাখিল হয়নি। জামিন আবেদনকারীরা নিচের ধাপের কর্মকর্তা, তাঁদের সম্পৃক্ততা নেই। এজাহারে কোথাও তাঁদের (জামিন আবেদনকারী চারজন) নাম নেই। যারা বোর্ড, যারা অনুমোদন দিয়েছে, ক্রেডিট কমিটি—তাদের নাম আসেনি।

আদেশের শেষ পর্যায়ে আদালতে হাজির চার জামিন আবেদনকারীর দুজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাঁদের একজন আদালতে বলেন, ‘আমরা তখনো প্রতিবাদ করেছি। কর্তৃপক্ষ ছিল—তারা সাহায্য করেনি। আমরা কী করব?’ একপর্যায়ে তাঁরা আদালত থেকে বেরিয়ে যান।  

আরও পড়ুন

পরে চার কর্মকর্তার আইনজীবী এ এম মাছুম প্রথম আলোকে বলেন, চারজনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। যদি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের উপাদান না থাকে, তাহলে জামিন বিবেচনা করতে বলেছেন।