গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে যা জানতে পারল পুলিশ

ধর্ষণপ্রতীকী ছবি

মেয়েটিকে সারাদিন শিকলে বেঁধে রাখা হতো। শুধু শৌচাগারে যাওয়া অথবা খাবার সময় শিকল খুলে দেওয়া হতো।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাটে ২৫ দিন আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে পুলিশ এই ঘটনা জানতে পেরেছে।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার চারজন স্বীকার করেছেন, মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হতো। ধর্ষণের ভিডিও বিদেশে থাকা এক ব্যক্তির কাছে পাঠানো হতো।

মোহাম্মদপুরের একটি ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে গত শনিবার এক তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, শনিবার রাতে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে ওই তরুণী জানালা দিয়ে চিৎকার করে স্থানীয় এক বাসিন্দার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ওই ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশ গিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগী তরুণী উদ্ধার হওয়ার পর চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহার অনুযায়ী, তরুণীটির বাবা ও মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে। পরে তাঁরা অন্যত্র বিয়ে করেছেন। তরুণীটি থাকতেন তাঁর বড় বোনের বাসায়। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা তাঁর পূর্বপরিচিত।

পুলিশ গতকাল রোববার রাতেই জানিয়েছিল, ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সান (২৬), রকি (২৯), হিমেল (২৭) এবং তাঁদের সহায়তাকারী সালমা ওরফে ঝুমুর।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

ডিএমপির ডিসি এইচ এম আজিমুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ওই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত একজন ব্যারিস্টারের নাম এসেছে। তিনি কানাডায় থাকেন। ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই ব্যারিস্টারের পরিকল্পনায়ই তরুণীকে বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। ধর্ষণকারীরা ভিডিও ধারণ করে ব্যারিস্টারের কাছে পাঠাতেন। প্রাথমিকভাবে তাঁদের কাছে মনে হচ্ছে, ভিডিও দিয়ে ব্যবসা করতেন তাঁরা।

পুলিশ জানায়, পুলিশ সদস্যরা যখন মোহাম্মদপুরের ফ্ল্যাটটিতে যান, তখন মেয়েটিকে গিয়ে শিকল পরানো অবস্থায় পান। ফ্ল্যাটটি ব্যারিস্টারের নামে ভাড়া করা। আর সালমা নামের মেয়েটিকে বেতন দিয়ে রাখা হয়েছিল তরুণীকে পাহাড়া দিতে।

তদন্তের স্বার্থে ব্যারিস্টারের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। ডিএমপির ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, তাঁকে খোঁজা হচ্ছে। তিনি যদি বিদেশেও থাকেন তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হবে।