‘ভুলবশত’ বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনকে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন মামলার বাদী। একই সঙ্গে মামলার আসামির তালিকা থেকে মাহবুব হোসেনের নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন তিনি।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ মঙ্গলবার এ আবেদন করেন বাদী মো. নাদীম। তাঁর এই আবেদনের বিষয়ে আদালত এক আদেশে বলেন, হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি মাহবুব হোসেনের নাম প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে। পরে বাদী আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন। তবে নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, হত্যা মামলাটির তদন্ত চলমান। বাদীপক্ষে আসামি মাহবুব হোসেনের নাম প্রত্যাহারের বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। একই সঙ্গে আদালত হত্যা মামলাটি আইনানুগভাবে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বাদী নাদীম বলেন, মো. মাহবুব হোসেন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন। ভুলবশত তাঁর নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলি করে হত্যার ঘটনায় ৬ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় এই মামলা করেন মো. নাদীম। মামলায় আসামিদের তালিকার ৪ নম্বরে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে মো. মাহবুব হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়। এই মাহবুব হোসেন বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়। কারণ, এখন পর্যন্ত যে ২৩ জন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদের মধ্যে মাহবুব হোসেন নামের কেউ নেই।
এই আসামির বিষয়ে স্পষ্ট হতে গত রোববার ও গতকাল সোমবার একাধিকবার বাদী মো. নাদীমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। আজ তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আসামির তালিকা থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের নাম বাদ দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন এবং পরে জবানবন্দিও দেন।
ওই মামলায় আসামিদের তালিকায় আরও আছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও আহমেদ কায়কাউস, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও ফয়েজ আহমেদ এবং সাবেক সচিব আনিসুর রহমান (নির্বাচন কমিশনারও ছিলেন)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, যাত্রাবাড়ী থানার রায়েরবাগে গত ১৯ জুলাই বিকেলে ছাত্র-জনতার মিছিল চলছিল। তখন কামরাঙ্গীরচরের টেকেরহাট ইউনিট আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খোকনসহ অন্য নেতারা ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে সশস্ত্র হামলা করেন। ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে বুলেট ও গুলি ছোড়া হয়। একপর্যায়ে মেহেদী হাসান (১৮) নামের এক তরুণের থুতনিতে গুলি লাগে। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মেহেদীর চাচা উল্লেখ করে থানায় এই মামলা করেন মো. নাদীম। মামলায় ৯৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে।