যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ঢাকা, ১১ মার্চছবি: পিআইডি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

আজ সোমবার দুপুরে মন্ত্রী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া সমসাময়িক নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের বড় বাজার দখল করে রাখা বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের পোশাকশিল্পের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা নিয়ে তদন্ত করছে দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন (ইউএসআইটিসি)। এ নিয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তদন্ত করছে, “সঠিক টার্ম” এটা নয়। তাদের সঙ্গে শ্রম অধিকারের উন্নয়ন নিয়ে আমাদের সঙ্গে বহুদিন ধরে আলাপ-আলোচনা চলছে। সেই আলোচনার অংশ হিসেবে কয়েকটি সংস্থা আমাদের সঙ্গে বসেছে। শ্রম অধিকার নিয়ে এটা নিয়মিত প্রক্রিয়া। এটা আগেও হয়েছে। অর্থাৎ কর্ম পরিবেশের উন্নয়ন, শ্রম পরিবেশের উন্নয়ন। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা আছে, চলছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠি এবং ওই চিঠির উত্তরের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীও ফিরতি চিঠিতে সম্পর্ক উন্নয়নের কথা আরও দৃঢ় করা, বহুমাত্রিক করার কথা বলেছেন। আমাদের সম্পর্ক ভবিষ্যতের দিনগুলোয় আরও সুন্দর হবে। আরও দৃঢ় হবে, এগিয়ে যাবে।’

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে চীন, ভারত ও রাশিয়ার যোগাযোগ এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যে আছি। মিয়ানমারে যা ঘটছে, সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সমরাস্ত্র কেনার প্রসঙ্গ এসেছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তুরস্ক থেকে কিছু ড্রোন ও সামরিক সরঞ্জাম কিনেছি। সেটি আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। আমরা সার্বিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও বাণিজ্য নিয়ে আলাপ করেছি।’

বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশিদের সেবা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে লাখ লাখ লোক কাজ করেন। কনস্যুলার সার্ভিস দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ জনবল দরকার, সেটি দেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণে অনেক সময় দ্রুত সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। আবার অনেক সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কনস্যুলার বা দূতাবাসের থাকে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হতে হয়। এ কারণে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। তবে দূতাবাসের কারও কাজে গাফিলতি পেলে বা ইচ্ছাকৃত কেউ কাউকে হয়রানি করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আক্ষেপ
দেশে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশে দেখা যায়, কোনো উৎসব হলে সেখানে পণ্যের মূল্য কমিয়ে দেয়। আমাদের দেশে উল্টো। কিছু মজুতদার আছেন, তাঁরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের বিরাটসংখ্যক ব্যবসায়ী অসৎ মনোবৃত্তি নিয়ে... কোনো একটা উৎসব এলে, কোনো একটা উপলক্ষ পেলে; যখন মানুষের প্রয়োজন বাড়ে, তখন পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়।’

সরকার অসাধু ব্যবসায়ী, মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকার সচেষ্ট।