‘সরকারের নীরবতার’ প্রতিবাদ, শনিবার গণ–অনশন করবে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
বিভিন্ন দাবির বিষয়ে ‘সরকারের রহস্যজনক নীরবতার’ প্রতিবাদে আগামী শনিবার দেশজুড়ে সকাল-সন্ধ্যা গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করবে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ঢাকায় এ কর্মসূচি পালিত হবে শাহবাগ চত্বরে।
ঐক্য পরিষদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশ থেকে সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব বেশ কয়েকটি দাবি উত্থাপন করে। এসব দাবি মেনে নেওয়ার জন্য দেশের সব রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় সব কটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল পৃথক পৃথকভাবে তাদের ঘোষিত নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে কোনো কোনো দাবি মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। আওয়ামী লীগ তাদের ঘোষিত নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে জাতীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ের দাবি ছাড়া বাদবাকি অন্য সব দাবি মেনে নেয়। দলটি প্রতিশ্রুতি দেয় যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, বৈষম্য বিলোপ আইন ও দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করবে। এর পাশাপাশি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করবে; অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, পার্বত্য চুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু এ পর্যন্ত এসব দাবি পূরণে সরকারের কোনো উদ্যোগ প্রত্যক্ষভাবে দেখা যায়নি।
ঐক্য পরিষদ বলেছে, ধর্মীয়-জাতিগত এবং সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন সংগঠনকে সমন্বিত করে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর প্রাথমিক পর্যায়ে চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকার শাহবাগ চত্বরে আয়োজিত সমাবেশ থেকে প্রায় আড়াই লাখ লোকের গণস্বাক্ষরসংবলিত স্মারকলিপি নিয়ে পদযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে যাওয়ার কালে একপর্যায়ে পুলিশ মিছিলটির গতি রোধ করে। পরে সাত সংখ্যালঘু নেতা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে গণস্বাক্ষরসংবলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অর্পণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তা গ্রহণ করেন।
ঐক্য পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এরপর ৯০ দিন পার হলেও কোনো উদ্যোগ দেখা না যাওয়ায় কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে গত ১৬ জুলাই সারা দেশে একই দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানী ঢাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়েছিল জাতীয় শহীদ মিনার চত্বরে।
ঐক্য পরিষদ বলেছে, এসব দাবি নিয়ে সরকারের রহস্যজনক নীরবতায় বাধ্য হয়ে ঐক্য পরিষদ দেশব্যাপী আগামী শনিবার সকাল-সন্ধ্যা গণ–অনশন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।