রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা বাড়তে পারে

১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বোঝা বাংলাদেশের ওপর চেপে আছেফাইল ছবি: রয়টার্স

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী মে মাসেই এমনটি ঘটতে পারে। ফলে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে টেকনাফে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা বাড়তে পারে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যদের অনুপ্রবেশের ঘটনাও বৃদ্ধি পেতে পারে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে দেওয়া জননরিপত্তা বিভাগের এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ওই প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সীমান্তে যুদ্ধাবস্থার কারণে সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র সহজলভ্য হওয়ায় সন্ত্রাসী দল বা গোষ্ঠী আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্যবহার করতে পারে। আরাকান আর্মি বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলেও প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়।

মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় মাদক ও চোরাচালানকৃত পণ্যের সরবরাহ বেড়ে যেতে পারে বলেও প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়। এ ছাড়া প্রতিবেদনে কয়েকটি ঝুঁকির কথাও উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা/মগ) অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ; বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অরক্ষিত স্থল ও জল সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; রোহিঙ্গাদের রেশনের অবৈধ পাচার রোধ করা ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর লড়াই চলছে কয়েক মাস ধরে। আরাকান আর্মির সঙ্গে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও বিজিপির পাঁচ শতাধিক সদস্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও টেকনাফে আশ্রয় নেন। এর মধ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জন সেনা ও বিজিপি সদস্যকে জাহাজে করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়। সর্বশেষ ২৫ এপ্রিল মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় ।

বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি ও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সংসদীয় কমিটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব বাহিনীকে আরও সচেতন ও সতর্ক থেকে কাজ করার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া মাদক নির্মূলে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি কঠোরভাবে ‘কিশোর গ্যাং’ দমন করার সুপারিশ করেছে কমিটি।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সামছুল হক, সামিল উদ্দিন আহমেদ, ময়েজ উদ্দিন শরীফ, মো. ছানোয়ার হোসেন, চয়ন ইসলাম, মো. সাদ্দাম হোসেন ও হাছিনা বারী চৌধুরী।

গণপূর্তের প্রকল্প নিয়ে অসন্তোষ

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন পূর্বাচল নতুন শহর ও ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প এখনো বসবাস উপযোগী না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব কমিটি। গতকাল সকালে সংসদ ভবনে এ কমিটির বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম। বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য ও চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, মাহবুব উল আলম হানিফ, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রাণ গোপাল দত্ত, অপরাজিতা হক, শাহরিয়ার আলম ও খাদিজাতুল আনোয়ার।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর ও ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প আগামী জুলাই মাসে সরেজমিনে পরিদর্শন করবে কমিটি। এ ছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিটি। চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ না করে নতুন করে কোনো প্রকল্প না নিতেও সুপারিশ করেছে কমিটি।