ওশানম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সাঁতারে সফল ৬ বাংলাদেশি

ওশানম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সাঁতার শুরুর আগে বাংলাদেশের সাত সাঁতারু (বাঁ থেকে) ফারুক হোসেন, আলী রওনক ইসলাম, আবদুল্লাহ আল ইমরান, সাইফুল ইসলাম, নাসির আহমেদ, মো. ইসতিয়াক উদ্দিন ও আরিফুর রহমান। আজ শনিবার থাইল্যান্ডের ফুকেটেছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের ফুকেটে আজ শনিবার দূরপাল্লার আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রতিযোগিতা ওশানম্যান ওয়ার্ল্ড ফাইনাল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের ছয়জন সাঁতারু সফল হয়েছেন। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সাতজন অংশ নিলেও একজন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বের সাঁতার শেষ করতে পারেননি।

স্থানীয় সময় আজ সকাল সাড়ে ৭টায় আন্দামান সাগরে ১০ কিলোমিটার দূরত্বের ওশানম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সাঁতার শুরু হয়। ওশানম্যানের বৈশ্বিক কর্তৃপক্ষ বছরজুড়ে বিভিন্ন দেশে সমুদ্রে দূরপাল্লার সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এরই সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা ‘ওশানম্যান ওয়ার্ল্ড ফাইনাল চ্যাম্পিয়নশিপ’। ওশেনম্যান ওয়ার্ল্ড ফাইনাল ও ওশানম্যান ওপেন—এই দুই শ্রেণিতে ১০ কিলোমিটার দূরত্বের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সাঁতারে ৭২ দেশের মোট ২২৯ জন সাঁতারু প্রতিযোগিতা করেন। আগে ওশানম্যানের মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ফলাফলের ভিত্তিতে ওশানম্যান ওয়ার্ল্ড ফাইনালে সুযোগ পাওয়া যায়। ওশানম্যান ওপেনে সাঁতারুরা সরাসরি নিবন্ধন করে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান।

ওশানম্যানের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া ফলাফলে দেখা যায় বাংলাদেশি সাঁতারুদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম রাসেল সবচেয়ে দ্রুত সাঁতার শেষ করেন। ২ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট সময় নিয়ে ওশানম্যান ওয়ার্ল্ড ফাইনাল শ্রেণিতে ১৪০ জন সাঁতারুর মধ্যে ৩৩তম স্থান অর্জন করেছেন মো. সাইফুল ইসলাম। নিজের ২০-২৯ বছর বয়স গ্রুপে তাঁর অবস্থান সপ্তম।

সাঁতার শেষ করার পর মুঠোফোনে সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে ওশানম্যান প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার চেষ্টা করছি। এ বছর ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ সম্পন্ন করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সুযোগ পেয়েছি। যে সময় নিয়ে সাঁতার শেষ করেছি, তা আমাকে ভবিষ্যতে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা জোগাবে।’

ওশানম্যান ওয়ার্ল্ড ফাইনাল শ্রেণিতে বাংলাদেশের মো. ইসতিয়াক উদ্দিন সাঁতার সম্পন্ন করেছেন ৩ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট ৯ সেকেন্ডে। তাঁর অবস্থান ৯৬তম। ২০–২৯ বছর বয়স গ্রুপে তিনি হয়েছেন ১৭তম। ৪০ থেকে ৪৯ বছর বয়স গ্রুপ থেকে আবদুল্লাহ আল ইমরান ৪ ঘণ্টা ৪ মিনিট ৯ সেকেন্ডে সাঁতার শেষ করেছেন। তাঁর অবস্থান ১২২তম। নিজের বয়স গ্রুপে হয়েছেন ১৯তম। ৪ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডে সাঁতার শেষ করে ১২৯তম স্থানে আছেন আলী রওনক ইসলাম। নিজের বয়স গ্রুপে (২০‍–২৯ বছর) হয়েছেন ২১তম।

আরও পড়ুন

এই চারজন ছাড়াসহ আরও তিনজন বাংলাদেশি অংশ নিয়েছেন ওশানম্যান ওপেন শ্রেণিতে। সরাসরি নিবন্ধন করে এই শ্রেণিতে অংশ নেওয়া যায়। ওশানম্যান ওপেনে ৮৯ জন সাঁতারু অংশ নিয়েছেন। ৩ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ১১ সেকেন্ড সময় নিয়ে আরিফুর রহমান ৪০তম স্থান পেয়েছেন। নিজের বয়স গ্রুপে (৩০-৩৯ বছর) তাঁর অবস্থান একাদশ। ফারুক হোসেনের সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা ১৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড। তাঁর অবস্থান ৬১তম। ৩০–৩৯ বছর বয়স গ্রুপে তিনি আছেন ষোড়শ স্থানে। নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করতে না পারায় বাংলাদেশের নাসির আহমেদ ওশেনম্যান সাঁতার সম্পন্ন করতে পারেননি।

ওশানম্যান সম্পন্ন করার পর সাইফুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

ওশানম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে শীর্ষ তিনটি স্থান অর্জন করেছেন যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়ার আরনেস্ট ফাবিয়ান উইজায়া (২ ঘণ্টা ১৩ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড), পোল্যান্ডের আর্টুর আরেন্ট (২ ঘণ্টা ১৪ মিনিট ৫২ সেকেন্ড) ও বেলারুশের বার্টান্ড ভেনচুরি।

ওশানম্যানের ওয়েবসাইট (https://oceanmanswim.com) থেকে জানা যায়, উন্মুক্ত সাগরে সাড়ে ৪ ঘণ্টায় সাঁতারুদের ১০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে হয়। এই দূরত্ব সরাসরি নয়, যাওয়া ও ফিরতি—এই দুই পথে সাঁতরাতে হয়। ওশেনম্যান খেতাব পেতে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিযোগীদের দেড় ঘণ্টায় ৩ কিলোমিটার, ৩ ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার এবং সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে। একই সঙ্গে ফুকেটে আজ হাফ ওশেনম্যান (৫ কিলোমিটার), স্প্রিন্ট (২ কিলোমিটার), শিশুদের ওশেনকিডস (৫০০ মিটার) এবং ওশেনটিমস (৩ x ৫০০ মিটার) সাঁতার প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।