আস্থা বাড়াতে রাজনৈতিক মামলা ও গ্রেপ্তার এড়ানোর পরামর্শ যুক্তরাজ্যের

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মারি ট্রিভেলিয়ান
ছবি: পিআইডি

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মারি ট্রিভেলিয়ান নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা এবং গ্রেপ্তার এড়ানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর আস্থা আর বিশ্বাস বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি রাজনীতিবিদদের মধ্যে অব্যাহত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সংঘাতকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।
আজ রোববার বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ–যুক্তরাজ্য অংশীদারত্ব’ শীর্ষক আলোচনায় ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ওই পরামর্শ দেন।

যুক্তরাজ্যের ইন্দো–প্যাসিফিকবিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মারি ট্রিভেলিয়ান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের অঙ্গীকার করেছেন। আমি তাঁর এই অঙ্গীকারকে স্বাগত জানাই। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ বাংলাদেশের লোকজনকে এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিতে হবে।’ তাঁর মতে, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সংসদীয় গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। এটি নিশ্চিত হলে সংবিধানের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে।

বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের সফররত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিছু সুপারিশের কথা বলেন। অ্যান–মারি ট্রিভেলিয়ান বলেন, নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাজনীতিবিদদের বাড়তি উদ্যোগ নিতে হবে। সহিংসতাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার বিষয়ে তাঁদের অঙ্গীকার করতে হবে। গ্রেপ্তার, ডিটেনশন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা এড়ানোর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর প্রস্তাবের মাধ্যমে আস্থা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে পারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। এখানে আমরা সহায়তা করতে পারলে খুশি হব।’ তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনই এ সমস্যার একমাত্র সমাধানের উপায় বলে মন্তব্য করেন। তাঁর মতে, এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার জন্য যুক্তরাজ্যের অর্থায়ন অব্যাহত রাখারও আশ্বাস দেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশের কৌশল তুলে ধরেন। বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক কোনো সামরিক জোটের সঙ্গে নেই। বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক তথা অর্থনৈতিক আইপিএসে থাকার বিষয়ে নীতিগতভাবে অটল সিদ্ধান্তে রয়েছে।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী পুনরায় ঢাকা ও লন্ডনের মধ্যে বিমান চালুর বিষয়ে ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক একটি চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং যুক্তরাজ্যের পক্ষে চুক্তি সই করেন দেশটির ইন্দো-প্যাসিফিকবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।

আরও পড়ুন