জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব শিক্ষক থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবি শিক্ষক–কর্মচারীদের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে চান না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলে তাঁর সঙ্গে কাজ করবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। সেই উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে একটি নির্দেশনার ব্যানারও প্রধান ফটোকে ঝুলিয়েছেন তাঁরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকেও শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের প্রায় সাত হাজার গণস্বাক্ষরসহ একটি আবেদন জমা দিয়েছেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া এক সপ্তাহ ধরে নানা ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
আজ বুধবার ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে ‘বাহিরের ভিসির জন্য গেটলক’ লেখা একটি ব্যানার ঝোলানো।
ব্যানারে বলা হয়েছে, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইরের কোনো ভিসি মানবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।’
শিক্ষার্থীরা বলছেন, অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষকেরা উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বুঝে উঠতে উঠতে তাঁদের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের সুযোগ–সুবিধার মানোন্নয়নে কিছুই করার সুযোগ তাঁরা পান না। রাজধানীর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত হয়েও বারবার বঞ্চিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–শিক্ষকেরা। এবার যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষক থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়, যাঁরা কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক নাছির আহমাদ প্রথম আলোকে বলেন, অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো শিক্ষক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলে তাঁর সঙ্গে কাজ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মেজবাহ-উল-আজম প্রথম আলোকে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে এসেছে। এসব সমস্যা বাইরের উপাচার্যরা এসে বুঝে উঠতে পারেন না। ফলে তাঁরা এই সমস্যাগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে নেন না। অনেক সময় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী–কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগের দাবি আগে থেকেই করা হচ্ছে। আমাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞ শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বুঝে উপাচার্যের মতো পদ ভালোভাবেই সামলাতে পারবেন।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে নিজস্ব শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ প্রয়োজন, যাঁরা সহকর্মীদের প্রতি সহমর্মী হবেন এবং শিক্ষার্থীবান্ধব হবেন। দলমত–নির্বিশেষে কাজ করবেন—এমন উপাচার্য প্রত্যাশা করি।’