সারাহর কিডনি ও কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পর চারজনই ভালো আছেন

ইউডার চারুকলা বিভাগে পড়তেন সারাহ ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

সারাহ ইসলামের কিডনি ও কর্নিয়া চারজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তাঁর দুটি কিডনি দুই নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, আর কর্নিয়া দুটি দুই পুরুষের চোখে। তাঁদের চারজনই ভালো আছেন বলে নিকটাত্মীয়, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

মৃত ঘোষিত সারাহ ইসলামের একটি কিডনি দেওয়া হয় মিরপুরের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে। ওই গৃহবধূর কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজটি হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। তাঁর চিকিৎসা চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ব্লকে। আজ শুক্রবার সকালে ওই ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্ত্রী ভালো আছেন।

সারাহ ইসলামের অন্য কিডনিটি প্রতিস্থাপন করা হয় রাজধানীর মিরপুরের বেসরকারি কিডনি ফাউন্ডেশনে। হাসপাতালের প্রধান ও দেশের বিশিষ্ট কিডনি রোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হারুন–অর–রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, কিডনি গ্রহীতা ওই নারী ভালো আছেন। তবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগবে।

আরও পড়ুন

গত বুধবার দেশে প্রথম মৃত ঘোষিত কোনো ব্যক্তির অঙ্গ অন্য কোনো রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। বিএসএমএমইউয়ের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২০ বছরের সারাহ ইসলাম। তাঁর জীবনের আশা ছিল না। দেশের আইন মেনে সারাহর মৃত্যু ঘোষণার পর তাঁর অঙ্গদানে সম্মত হন মা শবনম সুলতানা। গুরুতর অসুস্থ থাকার সময় সারাহ নিজেও এমন ইচ্ছার কথা তাঁর মাকে বলেছিলেন।

গত বুধবার বিএসএমএমইউতে একটি কিডনি ও কিডনি ফাইন্ডেশনে অন্য কিডনি দুই নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। পরের দিন অর্থাৎ গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর দুটি কর্নিয়া দুই পুরুষের চোখে লাগানো হয়। একটি বিএসএমএমইউতে এবং অন্যটি সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে।

অঙ্গ দান করে দেশে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন সারাহ ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

এই জটিল অস্ত্রোপচারে একাধিক চিকিৎসকদল কাজ করেছিল। তাদের কাজের সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন বিএসএমএমইউয়ের আইসিইউ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কর্নিয়া দেওয়া দুই ব্যক্তিও সুস্থ আছেন।

অঙ্গদান হতে হয় নিঃস্বার্থ। এর সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেন বা লাভ–লোকসানের সম্পর্ক থাকে না।

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা বলেছেন, কিডনি, কর্নিয়া বা যেকোনো অঙ্গ কাকে দেওয়া হবে, তা দাতার পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়দের জানানোর রীতি নেই। এতে ‘ইমোশনাল ব্লাকমেইল’–এর সুযোগ থাকে, নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ারও ঝুঁকি থাকে।

আরও পড়ুন