সমস্যা আসেই, ঘাবড়ালে চলবে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নেন। জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা। ২৫ জুন
ছবি: পিআইডি

বাধা, প্রতিরোধ ও সমালোচনার পরও সরকার দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ভয়ের কিছু নেই, সময়ে সময়ে সমস্যা আসেই। সমস্যা দেখে ঘাবড়ালে চলবে না। এটা মোকাবিলা করতে হবে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তো অনেক রকমের কথা শুনি, আজকেই এ সরকার ফেলে দেবে। কালকেই এটা করবে, ওটা করবে। আজকে যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেলাম, এটা আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় না আসে, এটা বাস্তবায়ন করবে কে? আমাকে একটা লোক দেখান, সেটা করতে পারবে। নিঃস্বার্থভাবে দেশের জন্য কাজ করবে, একটি মানুষ দেখান। সে রকম কোনো নেতৃত্ব আপনারা যদি দেখাতে পারেন, আমার কোনো আপত্তি নেই।’

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, সময়ে সময়ে কালো মেঘ দেখা যায়। কথায় বলে, ‘মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে।’

কিছু লোক কোনো কিছুই ভালো চোখে দেখে না

এবারের বাজেটকে অনেকেই উচ্চাভিলাষী বলছে, এমনটা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই বলছে, এটা বাস্তবায়নযোগ্য না। এ কথাগুলো সব সময় শুনে থাকি। কিছু লোক আছে সবকিছুতে নেতিবাচক কথা বলা অভ্যাস। তারা কোনো কিছুই ভালো চোখে দেখে না। সেটা দেশের জন্য দুর্ভাগ্য। আমি এইটুকু বলতে পারি, তারা হয়তো গ্রামে কখনো যায়নি, দেখেনি গ্রামের অবস্থা। আমাদের দরিদ্রতার হার গ্রামে হ্রাস পেয়েছে। শহরে হয়তো কিছুটা আছে। গ্রামের মানুষের কষ্ট তেমন নেই।’

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বাজেটটি আমাদের মেয়াদের ১৫তম এবং চলতি মেয়াদের শেষ বাজেট। কারণ, নির্বাচন এই বছরেরই শেষে অথবা আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে হবে। কাজেই এটা আমাদের শেষ বাজেট। তবে একেবারে শেষ কি না, সেটা বাংলাদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। সেই সিদ্ধান্তের দায়িত্ব বাংলাদেশের জনগণকেই আমি দিচ্ছি।’

মূল‌্যস্ফীতি প্রধান সমস্যা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মূল্যস্ফীতিকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য চলতি অর্থবছরে এবং আগামী অর্থবছরেও কৃচ্ছ্রসাধন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিত্যপণ্য, বিশেষ করে চালের ওপর আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। ডিজেলের মূল্য কমাতে আগাম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বিদ‌্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ, সেটা সবাইকে দিতে হবে বলে আবারও উল্লেখ করেছেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি প্রশ্ন রাখেন, আর কত ভর্তুকি সরকার দেবে। বিদ‌্যুৎ ব‌্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ভর্তুকি ব্যয় কমানোর জন্য ইতিমধ্যে জ্বালানি ও বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। এটা সময়ে সময়ে করতে হবে।

আপৎকালীন এই সময়ে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবন এখন প্রায় খামারবাড়ি

এর আগে পতিত জমি অনাবাদি না রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে বিষয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে প্রত‌্যেকেই তাঁদের পতিত জমিতে চাষ শুরু করেছেন। তিনি নিজেও করছেন। গণভবন এখন প্রায় খামারবাড়ি।