বিদেশি ঋণের অপচয় রোধ, কার্যকর অটোমেশন ও সফটওয়্যার–শিল্পের বিকাশের স্বার্থে সিটা প্রকল্পের যথাযথ পরিমার্জনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ৩২ শিক্ষক, তথ্যপ্রযুক্তি–বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এ আহ্বান জানান।
স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি (সিটা) হলো একটি প্রকল্প, যা বাংলাদেশ সরকারের পাঁচটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়াতে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিটা প্রকল্পে অহেতুক বিদেশভ্রমণ, ৩১৫ কোটি টাকার মধ্যে ৩৫ কোটি টাকায় বিদেশে প্রশিক্ষণ, অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ২০০ কোটি টাকায় কেনা, যা প্রায় ৫ গুণ বেশি ব্যয় পরিকল্পনায় আছে। ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্যর্থ এইভিএএসের (এনবিআর ভ্যাট অটোমেশন) জন্য ৩৭০ কোটি টাকা পুনরায় বরাদ্দ করা হচ্ছে। দেশের অনুপযোগী এসএপি প্রযুক্তির আপগ্রেডেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে তা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বর্তমানে চালু কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ ই-জিপি আপগ্রেডেশনে বরাদ্দ ২৩৫ কোটি টাকা। এ ধরনের তুলনামূলকভাবে অগুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যারে বিপুল বরাদ্দ অপ্রয়োজনে বিদেশি কোম্পানি ও পরামর্শকদের যুক্ত করার ইঙ্গিত দেয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষজ্ঞরা বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবিত তিন হাজার কোটি টাকার সিটা প্রকল্পকে অপরিণামদর্শী ও বিদেশনির্ভর বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মতে, প্রকল্পের বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থের বড় অংশ বিদেশি সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও প্রশিক্ষণে ব্যয় হবে। দেশেই এসব কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে।
এতে বলা হয়, সিটা প্রকল্পের (একনেকে শর্ত যুক্তভাবে অনুমোদিত, ঋণচুক্তি বাকি) আওতায় দেশীয় কোম্পানিগুলোকে দুর্নীতিমুক্তভাবে নির্বাচন করে ৫০টির বেশি গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার তৈরি করা যেত। এতে ৪ হাজার সফটওয়্যার প্রকৌশলীর ৫ বছরের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হতো।
বিবৃতিদাতারা দেশের স্বার্থ ও সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থ অগ্রাধিকার দিয়ে সিটা প্রকল্পটি নতুন করে সাজানোর আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে সই করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মোস্তফা আকবর, মাইক্রোসফটের পার্টনার রিসার্চ ম্যানেজার সুমন নাথ, সোনালী ব্যাংকের সিআইটিও রেজওয়ান আল বখতিয়ার, বুয়েটের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক অনিন্দ্য ইকবাল, অধ্যাপক রিফাত শাহরিয়ার, ব্রেইন স্টেশন-২৩–এর সিইও রাইসুল কবির, বারিকই টেকনোলজিস লিমিটেডের সিইও আল আমিন সরকারসহ ৩২ শিক্ষক, তথ্যপ্রযুক্তি–বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা।