নুরুল হকের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলা করল পুলিশ

গণ অধিকার পরিষদের সমাবেশে নুরুল হকফাইল ছবি

আসামিকে আশ্রয় দেওয়া ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হকের (নুর) বিরুদ্ধে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পরিদর্শক জামাল উদ্দিন মীর বাদী হয়ে আজ বৃহস্পতিবার এই মামলা করেন।

হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরীফুল মিয়াজি রাতে নুরুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় নুরুল হকের বিরুদ্ধে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দান এবং আসামিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর মহানগর প্রকল্পে নুরুলের বাসা থেকে গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত ২১ জুলাই রাজধানীর পল্টনে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে ভবনমালিকের মামলায় ইয়ামিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মঙ্গলবার রাত দুইটার দিকে ডিবি সদস্যরা গেলে নুরুল হক ফেসবুকে লাইভ করেন। তিনি বলেন, মধ্যরাতে তাঁর বাসায় ডিবি ‘হানা’ দিয়েছে। তাঁর বাসার দরজা ভেঙে কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে ডিবি। নুরুল আরও বলেন, ‘আমাদের ছাত্ররা যখন সরকার পতনের আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ, তখনই প্রশাসন নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে।’

এর পরদিন গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় নুরুল হকসহ গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। তারা নুরুল হককে কয়েক দফা বেধড়ক মারধর করে। এতে নুরুল ছাড়াও দলটির ২০ জনের বেশি নেতা-কর্মী আহত হন।

নুরুল হককে গতকাল রাজধানীর কাকরাইলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তাঁকে নেওয়া হয়েছিল মহাখালীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। আজ বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নুরুলকে দেখতে ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে নুরুলকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয় ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর নুরুল হক ধানমন্ডিতে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন।

গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় নুরুল হককে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা
ফাইল ছবি

এদিকে নুরুলের বিষয়ে আজ বিকেলে ডিবি কার্যালয়ের সামনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম, নুর একজন মেধাবী ছাত্রনেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভোটে নির্বাচিত ভিপি। তাঁর উচিত ছিল পরিচয় দেওয়ার পরও পুলিশের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা। আমাদের পুলিশ সদস্যরা তাঁকে পরিচয় দিয়ে বলেছেন, আমরা থানা থেকে এসেছি। নুর তাঁদের চেনেনও, কারণ অনেক পুলিশ অফিসার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তারপরও আপনারা দেখেছেন তিনি পুলিশকে ডাকাত পরিচয়, পুলিশ বস্তির লোক—এসব কথা বলেছেন। আরও নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন।’

নুরুল হক এসব কথা বলার পরও পুলিশ তাঁর প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়েছে উল্লেখ করে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছি এবং তাঁর রুম থেকেই আমরা আমাদের যে মামলার আসামি, তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছি। আইনে আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া আছে, তার বাইরে আমরা কিছু করিনি।’

আরও পড়ুন