এ অর্জন দেশের সাংবাদিকতার মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছে

‘ইনমা গ্লোবাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড–২০২৫’ অর্জন করায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে সংবর্ধনা দিয়েছে নোয়াব। এ সময় মতিউর রহমানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এ কে আজাদ, শহীদুল্লাহ খান বাদলসহ অন্য সম্পাদকেরাছবি: প্রথম আলো

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’-এর সময় সাহসী সাংবাদিকতা, তরুণ পাঠকদের যুক্তকরণ এবং পরবর্তী সময়ে গৃহীত নানামুখী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে ‘ইনমা গ্লোবাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড–২০২৫’ অর্জন করায় প্রথম আলো সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমানকে সংবর্ধনা দিয়েছে নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে টাইমস মিডিয়া ভবনে আজ মঙ্গলবার এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ, নোয়াবের সহসভাপতি শহীদুল্লাহ খান বাদল, যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনের পরিচালক শামীম ইসলাম, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, বণিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী এবং সাপ্তাহিক কাউন্টার পয়েন্ট পত্রিকার সম্পাদক জাফর সোবহান।

লিখিত বক্তব্যে নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, মতিউর রহমান বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় একজন প্রধান ব্যক্তি। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই সক্রিয়ভাবে সমাজ বদলের কাজে নিজেকে যুক্ত করেছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৭০ সাল থেকে সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন।

এ কে আজাদ আরও বলেন, মতিউর রহমান ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বেসরকারি পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেমিনার ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে মতিউর রহমান শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশীয় সাংবাদিকতার পক্ষেও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। প্রথম আলোর মতো একটি সংবাদপত্র গড়ে তোলা এবং তা সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া একটি বড় কীর্তি। মতিউর রহমান সাহস, সততা ও পেশাদারত্বের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা দেশের সংবাদপত্রশিল্পের জন্য গর্বের বিষয়। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এ অর্জন বাংলাদেশের সাংবাদিকতার মর্যাদা বাড়িয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের সব পত্রিকাই তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভূমিকা রেখেছে। আমরা অনেক কঠিন সময় পার করেছি, সেই সময় গণমাধ্যমের ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়। বর্তমানে গণমাধ্যমের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে। পাঠকের অভ্যাস বদলেছে, আমাদেরও সেই অনুযায়ী বদলাতে হবে।’

‘মতিউর রহমান সাহস, সততা ও পেশাদারত্বের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা দেশের সংবাদপত্রশিল্পের জন্য গর্বের বিষয়।’
এ কে আজাদ, সভাপতি, নোয়াব

প্রথম আলোর যাত্রাটা শুরু থেকেই চ্যালেঞ্জিং ছিল উল্লেখ করে মতিউর রহমান বলেন, ‘পাঠকের জন্য ভালো কিছু করতে পারলে, ভালো মানের সাংবাদিকতা উপহার দিতে পারলে ছাপা পত্রিকাও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। অনেকেই বলেন, ছাপা পত্রিকার দিন শেষ হয়ে আসছে, তবে আমি মনে করি, মানসম্পন্ন কনটেন্টই সব মাধ্যমেই টিকে থাকার মূল চাবিকাঠি।’

শহীদুল্লাহ খান বাদল বলেন, ‘মতিউর রহমান আসলে আমাদের মাথার ওপর বটগাছের মতো। তিনি নিজের পথচলাতেই আমাদের জন্য দিশা তৈরি করেন। আমরা ভাগ্যবান যে তাঁর মতো একজন আমাদের ছায়া হয়ে আছেন।’

শামীম ইসলাম বলেন, মতিউর রহমান যা করে দেখিয়েছেন, তা এককথায় অসাধারণ ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। সাহস, দূরদৃষ্টি ও দায়িত্ববোধ নিয়ে তিনি শুধু প্রথম আলো নয়, পুরো সাংবাদিকতাকেই এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন।

আরও বক্তব্য দেন শামসুল হক জাহিদ, দেওয়ান হানিফ মাহমুদ ও শাহেদ মুহাম্মদ আলী। এ সময় ‘ইনমা গ্লোবাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ অর্জন করায় নোয়াবের পক্ষ থেকে মতিউর রহমানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ‘ইন্টারন্যাশনাল নিউজ মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন’ প্রদত্ত এই পুরস্কার বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলোর মধ্য থেকে উদ্ভাবনী উদ্যোগ, পাঠক সম্পৃক্ততা ও সমাজসচেতন সাংবাদিকতার জন্য প্রদান করা হয়।