দিয়াজ হত্যা মামলা: পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ

দিয়াজ ইরফান চৌধুরী
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলায় আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করেননি। মামলাটি অধিকতর তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন শুনানি শেষে এই নির্দেশ দেন। চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক জাকের হোসাইন মাহমুদ প্রথম আলোকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

দিয়াজের বড় বোন আইনজীবী জুবাঈদা সরোয়ার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সিআইডির দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে তাঁরা নারাজি আবেদন দিয়েছিলেন। এই আবেদন আদালত গ্রহণ করে পিবিআইকে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

দিয়াজ হত্যা মামলায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল সিআইডি।

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন বাসায় দিয়াজ ছাড়া পরিবারের আর কেউ ছিলেন না। এর ২২ দিন আগে দিয়াজসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের চার নেতার বাসায় তাণ্ডব চালানো হয়েছিল। ৯৫ কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতির অনুসারী নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যাওয়ার আগে দিয়াজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন—চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু, সহসভাপতি আবদুল মালেক, মনসুর আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরমান, প্রচার সম্পাদক রাশেদুল আলম, আপ্যায়ন সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদস্য আরিফুল হক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জামশেদুল আলম চৌধুরী।

আদালত সূত্র জানায়, আসামিদের মধ্যে শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর টিপু ও তাঁর ভাই মো. আরমান জামিনে আছেন, বাকিরা পলাতক।

২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্তে দিয়াজ ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে উল্লেখ করেছিলেন চিকিৎসকেরা। পরিবার ও ছাত্রলীগের একাংশ (দিয়াজের অনুসারী) তা প্রত্যাখ্যান করলে একই বছরের ১১ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে তাঁর লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত হয়। এই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজকে শ্বাস রোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।

২০১৯ সালের নভেম্বরে দিয়াজের পরিবার আদালতের মাধ্যমে আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীমকে মামলার আসামি করে। তখন মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

আজ আদালতের আদেশের পর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করতে পারেন না। এখন পিবিআই মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করবে বলে আশা তাঁর।