বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর সাড়ে ২৪ মিনিটে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন
ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১ নির্মাণকাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, এমআরটি লাইন-১-এ ১২টি ভূগর্ভস্থ স্টেশনে বিরতিসহ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ভ্রমণ করতে লাগবে ২৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ড এবং সাতটি বিরতিসহ নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল যেতে সময় লাগবে ২০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড। যাত্রীরা নতুন বাজার ইন্টারচেঞ্জের মাধ্যমে ১৬টি স্টেশনে বিরতিসহ মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যে কমলাপুর থেকে পূর্বাচলে যেতে পারবেন। এমআরটি লাইন-১ চালু হলে এ রুটে প্রতিদিন আট লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন।

সূত্র আরও জানায়, নতুন বাজার স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) দিয়ে একটি ইন্টারচেঞ্জ সুবিধা থাকবে, যেখান থেকে যাত্রীদের জন্য পূর্বাচল থেকে বিমানবন্দর রুটে অথবা পূর্বাচল রুট থেকে বিমানবন্দরে যেতে পারবেন।

আরও পড়ুন

দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনের সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমটিসিএল) এম এ এন সিদ্দিক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

শেখ হাসিনা এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর দিয়াবাড়িতে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬-এর ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করেন।

প্রকল্প সূত্র জানায়, সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং পূর্বাচল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে এবং এলিভেটেড উভয় সুবিধাসংবলিত ৩১ দশমিক ২৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ করবে। ২০৩০ সাল নাগাদ রাজধানী ঢাকায় মোট ছয়টি মেট্রোরেল রুট উদ্বোধন করা হবে এবং ডিএমটিসিএল এই মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করবে।

এমআরটি লাইন-১-এর দুটি অংশ থাকবে

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী এমআরটি লাইন-১-এর দুটি অংশ থাকবে—একটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত (বিমানবন্দর রুট) ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার অংশ। এটি হবে ভূগর্ভস্থ এবং এতে ১২টি স্টেশন থাকবে। অপর অংশটি নতুন বাজার থেকে প্রায় ১১ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার এলিভেটেড লাইনসহ পূর্বাচল পর্যন্ত (পূর্বাচল রুট)। এতে সাতটি স্টেশন থাকবে। অন্যদিকে বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে নতুন বাজার এবং নদ্দা স্টেশন হবে ভূগর্ভস্থ।

বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জাইকা) এমআরটি লাইন-১-এর নির্মাণকাজের জন্য ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ব্যয়ভার বহন করবে।

এর মধ্যে জাইকা প্রকল্প সহায়তা (পিএ) হিসেবে দেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। জাপানি ফার্মের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম বিমানবন্দর-কমলাপুর-পূর্বাচল মেট্রোলাইনের নির্মাণকাজ তদারকি করবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকায় এমআরটি লাইন-১ প্রকল্প অনুমোদন দেয়।