নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আবেদনের শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেছেন, আমেরিকা বিভিন্ন দেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। অন্য কোনো দেশের বিচার বিভাগকে ভিসা নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করেনি। অথচ বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে ভিসা নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ কথা বলেন। আদালত আগামী ৯ আগস্ট শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন।
শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ বলেন, হাইকোর্টে মামলা শুনানির অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় বিচারিক আদালত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিষয়টি অবহিত করা হলেও তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ এবং একটি রায়ের প্রসঙ্গ টানেন তিনি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, মামলার কার্যক্রমে হাইকোর্ট কোনো স্থগিতাদেশ দেননি। স্থগিতাদেশ না থাকায় মামলা চলতে বাধা নেই। কার্যতালিকায় দেখিয়ে আজ সকালেও বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম মুলতবি চাওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২২ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়। কার্যতালিকায় থাকলেই মামলা বিচারাধীন হয় না। এটি দেখিয়ে কি অনন্তকাল মামলার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে? রুল ও স্থগিতাদেশ থাকতে হবে।
শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই ভিসা নীতি দিছে আমেরিকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া কোনো দেশেরই বিচার বিভাগকে ভিসা নীতিতে সম্পৃক্ত করেনি। এরপর আদালত বলেন, স্থগিতাদেশ না থাকলে মামলার কার্যক্রম চলবে বলে সুপ্রিম কোর্টের প্রজ্ঞাপন আছে। পরে আগামী ৯ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
এর আগে গত ১৯ মার্চ নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক। এই অভিযোগ গঠনের আদেশের বৈধতা নিয়ে গত ১৭ মে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন খালেদা জিয়া। কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।