জন্মনিবন্ধনের বিপুল তথ্য উধাও হয়নি, কিছু ডেটার অবলুপ্তি ঘটে

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সিস্টেমের সার্ভার থেকে জন্মনিবন্ধনের বিপুল তথ্য উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মূলত ঠিক নয়। তথ্য উধাও হয়নি। অনেক নিবন্ধক কার্যালয় আগে হাতে লেখা জন্মনিবন্ধন তথ্যাদি অনলাইনভুক্ত না করায় কিছু নাগরিকের জন্মনিবন্ধন তথ্য অনলাইনে অর্থাৎ সার্ভারে নেই। ওই নিবন্ধন তথ্যগুলো কখনো আপলোডও করা হয়নি। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এমন তথ্য এসেছে।

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক–আল–জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ রোববার প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত প্রতিবেদনের সংযুক্তি দাখিল করতে নির্দেশ দিয়ে আদেশের জন্য আগামী ১০ আগস্ট দিন রেখেছেন।

‘জন্মসনদ: বাংলাদেশে কয়েক কোটি মানুষের জন্মনিবন্ধন তথ্য সার্ভারেই নেই’ এবং ‘সাত কোটি জন্মসনদ নীরবে বাতিল’ ও ‘জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে নাগরিকেরা’ শিরোনামে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছরের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ হাইকোর্টে একটি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৯ মে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

এর ধারাবাহিকতায় জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সিস্টেমের (বিডিআরআইএস) সার্ভার থেকে বিপুল পরিমাণ জন্মনিবন্ধন উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির অনুসন্ধান প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী তানভীর আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সার্ভার থেকে বিপুল তথ্য উধাও হয়ে গেছে, সেটি সঠিক নয়—প্রতিবেদনে এসেছে। প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়েছে। আদালত প্রতিবেদনের সংযুক্তিগুলো আগামী ১০ আগস্টের আগে হলফনামা করে দাখিল করতে বলেছেন।’  

কিছু ডেটার অবলুপ্তি ঘটে

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের সহকারী রেজিস্ট্রার জেনারেল সামিউল ইসলামের সই করা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ইনপুট করা তথ্য সার্ভারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত হয়। কিন্তু অনেক নিবন্ধক কার্যালয় তাদের পূর্বের হাতে লেখা জন্মনিবন্ধন তথ্যাদি অনলাইনভুক্ত না করাতে অনেক নাগরিকের জন্মনিবন্ধন তথ্য অনলাইনে অর্থাৎ সার্ভারে নেই। এ ক্ষেত্রে সার্ভার থেকে তথ্য উধাও হয়ে যাওয়া বা সার্ভারের সংরক্ষিত তথ্যের গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার বিষয় নেই।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অতিমাত্রায় ব্যবহারকারীর চাপে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সার্ভার ও সফটওয়্যারটি অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং তিন মাস বিকল অবস্থায় ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সফটওয়্যার সচল ও ডেটাবেজটি পুনরুদ্ধার করার জন্য জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন প্রকল্পের সক্ষম জনবল না থাকায় ইউনিসেফের নিয়োগ করা পরামর্শক, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও প্রকল্পের কারিগরি টিমের সহায়তায় সিস্টেমটি অটো ব্যাকআপসহ সফটওয়্যার এবং ডেটাবেস সচল করা হয়। এ অবস্থায় হাতে লেখা জন্মনিবন্ধন তথ্যাদি অনলাইনভুক্ত করার কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ডেটাবেজে কিছু ডেটার অবলুপ্তি ঘটে।