তিন মামলায় তদন্ত চলছে, একটিতে অভিযোগপত্র

কোটা সংস্কার আন্দোলনফাইল ছবি

২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর শাহবাগ থানায় চারটি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনটির তদন্ত চলছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল রাজধানীর শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

এরপর ওই বছরের ১১ এপ্রিল সরকার সরকারি চাকরির ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়। পরে আন্দোলনকারীরা কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করেন।

এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ৫ জুন ২০১৮ সালে জারি করা সরকারি পরিপত্র বাতিল করেন। ওই পরিপত্রে সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (ধাপ) নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বাতিল করা হয়েছিল। হাইকোর্টের রায়ে কোটা ফিরে আসে। অবশ্য আপিল বিভাগ বিষয়টিতে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। পরবর্তী শুনানি আগামী ৭ আগস্ট।

হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। তাঁরা এখন সরকারি সব চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি করছেন। তাঁদের আন্দোলনের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সদস্যদের মারধর ও পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে গত শুক্রবার শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলাটিতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

পুলিশসহ বিভিন্ন সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে সংঘর্ষের ঘটনায় শাহবাগ থানায় হওয়া মামলায় তখনকার কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম (আদনান) এবং ফাইজুর, আতিক, ফারুক, জসীম, মশিউরসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রাশেদ খানকে তখনকার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ডেও নেওয়া হয়। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

বাকি তিনটি মামলা ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) রমনা বিভাগ তদন্ত করছে। এসব মামলায় আন্দোলনরতদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে গত শনিবার বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আইনজীবী জাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রাশেদ খান ছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা হয়নি।

অন্যদিকে পুলিশ বলছে, মামলার তদন্ত এখনো চলছে। ডিবি রমনা বিভাগের উপকমিশনার হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে তখনকার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া তিন মামলার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে। ওই সংগঠনের নেতারা ওই বছরের ৭ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের হয়রানি, হুমকি, হামলা, ক্যাম্পাসে যেতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন। তৎকালীন কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান গত শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ১৭ জন ৬ বছর ধরে চার মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে যাচ্ছেন।