সাদেক খান, মতিউরের মেয়ে, এস আলমের শ্যালকসহ ১০ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান ও তাঁর স্ত্রী ফেরদৌসী খানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আজ সোমবার এ আদেশ দেন। একই দিন আদালত এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের মেয়ে ফারজানা রহমান ও এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের (মাসুদ) শ্যালক মোহাম্মদ আরশেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
সাদেক খান ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেনের আদালতে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এ কে এম মুর্তজা আলী সাগর।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাদেক খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। সাদেক খান ও তাঁর মালিকানাধীন ২৯টি ব্যাংকে ৪৬৬ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সে জন্য তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি জরুরি।
অন্যদিকে সাদেক খানের স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনে বলা হয়, পাঁচ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাদেক খানের স্ত্রী ফেরদৌসী খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তিনিও যাতে বিদেশে যেতে না পারেন, সে জন্য নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। আদালত পরে সাদেক খান ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
মতিউরের মেয়ের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের মেয়ে ফারজানা রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি মতিউর রহমান, তাঁর স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। সম্প্রতি মতিউর রহমান ও তাঁর স্ত্রী লায়লা কানিজকে রাজধানীর বসুন্ধরা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাঁরা এখন কারাগারে আছেন।
এস আলমের শ্যালকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের শ্যালক মোহাম্মদ আরশেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আরশেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবুল ফয়েজ।
নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়, এস আলমের লুট করা কয়েক হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের সঙ্গে এই আসামির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে।
কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের মামলায় কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠান ও সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের পাঁচ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
অন্য যে পাঁচজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন সাউথইস্ট ব্যাংকের তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুলশান শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রেডিট ইনচার্জ মোরশেদ আলম মামুন, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখাপ্রধান মো. রেজওয়ানুল কবির, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এক্সপোর্ট ইনচার্জ অমিয় কুমার মল্লিক ও মো. আশরাফুল আলম।
কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠানসহ ছয়জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক আজিজুল হক। আবেদনে বলা হয়, আবদুল খালেক পাঠানসহ অন্যরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ৪৯৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় এই ছয়জনের বিরুদ্ধে ২ জানুয়ারি মামলা করে দুদক। আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দুদক জানতে পেরেছে। শুনানি নিয়ে আদালত কেয়া গ্রুপের গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।