‘স্যার না বলায়’ জেলা প্রশাসকের ক্ষুব্ধ আচরণ, প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি

অবস্থান কর্মসূচিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক। বুধবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনেছবি: প্রথম আলো

স্যার না বলায় রংপুরের জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন ক্ষুব্ধ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। এ ঘটনার প্রতিবাদে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে পালন করতে বসে পড়েন।

দেড় ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের প্রধান ফটকে জেলা প্রশাসক এসে দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপর অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন ওই শিক্ষক।

বুধবার সন্ধ্যার সাড়ে সাতটার দিকে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেন ওমর ফারুক নামের ওই শিক্ষক। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

আরও পড়ুন

এদিকে অবস্থান কর্মসূচির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে সমবেত হতে থাকেন। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

শিক্ষক ওমর ফারুক জানান, রংপুরের প্রথম শহীদ শংকু সমজদারের নামে একটি স্কুল পরিচালনা করেন তিনি। তিন বছর আগে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটিতে প্লে গ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। ওই স্কুলের কাজে জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন

অবস্থান কর্মসূচির সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ওমর ফারুক বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় জেলা প্রশাসককে স্যার সম্বোধন না করায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে তিনি (ওমর ফারুক) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর রাত পৌনে নয়টার দিকে ভবনের দোতলা থেকে জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে নিচে নেমে আসেন। তিনি নিজ কার্যালয়ের প্রধান ফটকে গিয়ে ওই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি স্যার সম্বোধন করতে বলিনি। এটি ভুল–বোঝাবুঝি।’ বিষয়টি মিটমাট হলে উভয় পক্ষ ছবি তোলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ওমর ফারুকের অবস্থান কর্মসূচির খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে এসে কর্মসূচিতে অংশ নেন। এরপর জেলা প্রশাসক নিচে নেমে এলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন শিক্ষকও সেখানে উপস্থিত হন।

তাঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। একজন জেলা প্রশাসককে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্যার বলবেন?’