ঘূর্ণিঝড় হামুন উপকূলে আঘাত হানতে পারে মধ্যরাতে

ঘূর্ণিঝড় হামুনের গতিপথ
ছবি: আবহাওয়া অধিদপ্তর

ঘূর্ণিঝড় হামুন বেশ শক্তি নিয়ে ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার গতিতে চট্টগ্রাম ও বরিশাল উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থলটি আজ মধ্যরাতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এর অগ্রভাগ আজ সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত আটটার মধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। এ সময়ে প্রবল বৃষ্টি শুরু হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জারি করা ১১ নম্বর বুলেটিনে এসব কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। তবে এটি উপকূলে আঘাত করার সময় গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। সমুদ্রে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় এলাকাকে প্লাবিত করতে পারে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের উপকূলীয় দ্বীপগুলো জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত এবং কক্সবাজার বন্দরকে ৬ নম্বর এবং মোংলাকে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দেশের সব কটি উপকূলীয় জেলার নদীবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো নৌযানকে সাগরে না যেতে বলা হয়েছে। আর সাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে দ্রুত উপকূলে এসে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল এবং চট্টগ্রামের মাঝ দিয়ে মেঘনা নদীর মোহনা ধরে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত করতে পারে। এর সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি এবং জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা আছে।
মনোয়ার হোসেন,  আবহাওয়াবিদ, আবহাওয়া অধিদপ্তর

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল এবং চট্টগ্রামের মাঝ দিয়ে মেঘনা নদীর মোহনা ধরে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত করতে পারে। এর সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি এবং জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা আছে।

ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে বিপুল পরিমাণে মেঘমালা বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। এতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনায় অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা আছে। তাই ওই এলাকার বাসিন্দাদের সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। পাহাড়ের পাশের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকাসহ সারাদেশে কমবেশি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফে সর্বোচ্চ ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ এসব এলাকায় বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে বাংলাদেশের উপকূল থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ফলে এর প্রভাব বলয়ের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। দিন যত গড়াবে বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতা তত বাড়তে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন