যেভাবে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে চালককে উদ্ধার করল ফায়ার সার্ভিস

দুর্ঘটনার শিকার লরি থেকে চালককে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। গতকাল রাতে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডেছবি সংগৃহীত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক তখন একরকম ফাঁকাই ছিল। যানবাহন চলছিল দ্রুতগতিতে। আর ঠিক এ সময়ে স্ক্র্যাপবাহী লরি চলন্ত একটি ট্রাকের পেছনে বিকট শব্দে ধাক্কা দেয়। এতে লরির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন সেখানে জড়ো হন।

তাঁদের মধ্যে কেউ একজন ফায়ার সার্ভিসকে উদ্ধারের জন্য খবর দেন। ততক্ষণে লরির চালক মোহাম্মদ টিপু (৩৪) জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ঘটনার ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে সেখানে পৌঁছায় কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা। এরপর শুরু হয় চালক টিপুকে জীবন্ত উদ্ধার করার প্রাণান্ত চেষ্টা। দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর অক্ষত অবস্থায় লরিচালককে উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আর ততক্ষণে মহাসড়কের যানজট অন্তত ১০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ভাটিয়ারী উত্তর বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। চালক টিপুর বাড়ি নোয়াখালী। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসার আগে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশ এবং স্থানীয় জনগণ।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লরিটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যাওয়ায় চালক আটকা পড়েছিলেন। সামান্য আহত চালক জ্ঞানও হারিয়ে ছিলেন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা একটি ক্রেন দিয়ে ও দুটি র‍্যাকারের সাহায্যে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। এরপর কাটার মেশিন দিয়ে লরির কেবিনের অংশ কেটে চালককে বের করে নিয়ে আসা হয়। চালককে উদ্ধার করে দুর্ঘটনার শিকার দুটি গাড়ি সরিয়ে নিতে রাত নয়টা বেজে যায়। এরপর আহত চালককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে দুর্ঘটনার কারণে ভাটিয়ারী উত্তর বাজারের এক পাশে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। রাত ১২টা পর্যন্ত যানজট ছিল। এ সময় যানবাহনের গতি কমে যায়।

বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ইফতারের পর হওয়ায় তখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় ফাঁকা ছিল। যে কয়েকটা গাড়ি চলছিল খুব দ্রুতগতিতে। এ সময় কয়লাবোঝাই একটি ট্রাক ধীরে ধীরে যাওয়ার সময় বেপরোয়া গতিতে এসে স্ক্র্যাপবাহী লরিটি পেছন থেকে সেটিকে ধাক্কা দেয়। এতে লরির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ভেতরে আটকা পড়েন চালক। গাড়ি দুটি অত্যন্ত ভারী ছিল। তাই চালককে উদ্ধার করা সহজ ছিল না।

কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা লরি চালককে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। ভেতর ঢুকে আটকে যাওয়া লোহা কেটে চালককে উদ্ধার করেন। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।