ঢাকা-নারিতা রুটে ফ্লাইট চালু করছে বাংলাদেশ বিমান

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট চালু হবে
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা থেকে জাপানের নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সরাসরি ফ্লাইট চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই আকাশপথে ফ্লাইট চালু হবে বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম। রোববার বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

শফিউল আজিম বলেন, বিমানের নেটওয়ার্ক চারদিকে বিস্তৃত করতে চান তিনি। এর অংশ হিসেবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নারিতায় ফ্লাইট চালু হচ্ছে। এ বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ফ্লাইট চালু করার ব্যাপারে কাজ চলছে। গালফ এয়ারের সঙ্গে ‘কোড শেয়ারিং’-এর মাধ্যমে ইউরোপে ‘সার্ভিস’ বিস্তৃতি করার ব্যাপারে কাজ করছে বিমান। এ ছাড়া ভরতের চেন্নাইয়ে ফ্লাইট চালুর ব্যাপারেও কাজ চলছে।

বিমানের সক্ষমতা বেড়েছে উল্লেখ করে বিমানের এমডি বলেন, সক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে বিমানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। শিগগিরই ঢাকা-টরন্টো রুটে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে বলেও তিনি জানান।

মতবিনিময় সভার শুরুতে এ বছর সুন্দরভাবে হজযাত্রা শুরু করা হয়েছে বলে জানান শফিউল আজিম। রোববার প্রথম দিনে (বিকেল পর্যন্ত) চারটি ফ্লাইট যাত্রী নিয়ে যথাসময়ে সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে জানান তিনি।

ঢাকা থেকে চীনের গুয়াংজু রুটে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার বিষয়ে বিমানের এমডি বলেন, ‘২৭ মে এ ব্যাপারে একটি বৈঠক আছে। দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। আশা করি আগামী বৈঠকে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

ঢাকা থেকে চীনের গুয়াংজু রুটে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার বিষয়ে বিমানের এমডি বলেন, ২৭ মে এ ব্যাপারে একটি বৈঠক আছে। দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। আশা করি আগামী বৈঠকে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

উড়োজাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের কাছ থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব সম্পর্কে শফিউল আজিম বলেন, ‘এটি আমাদের জাতীয় সামর্থ্যের বিষয়। তারা (এয়ারবাস) প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। সারা পৃথিবীতে এ রকম দু-একটি কোম্পানিই আছে। বোয়িং আমাদের পুরোনো বিশ্বস্ত সঙ্গী। আমরা ভেবে দেখব। এটি প্রমাণ করে আমাদের নেতৃত্বের ওপর তাদের আস্থা আছে। এখানে ব্যবসার সম্ভাবনা আছে বলেই তারা প্রস্তাব দিয়েছে।’ তবে এ-সংক্রান্ত কারিগরি ও অর্থনৈতিক সমীক্ষা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে আটটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ও দুটি মালামাল (কার্গো) পরিবহনের উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দিয়েছে এয়ারবাস। উড়োজাহাজ উৎপাদনকারী আরেক প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের পক্ষ থেকেও বিমানের সঙ্গে ব্যবসা সম্প্রসারণের আগ্রহ জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার জন্য বিমানের প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জনবল কাজ করছেন। ১১৯টি ক্যাটাগরির প্রায় দেড় হাজার যন্ত্র ব্যবহার করে এই সেবা দেওয়া হয়েছে। এখন বিমানবন্দরে প্রথম লাগেজ পাওয়া যায় উড়োজাহাজ অবতরণের ১৮ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ বিমানের পরিবর্তে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হতে পারে কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে শফিউল আজিম বলেন, ‘বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনা ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস বিষয় দুটি এক নয়। আমাদের সক্ষমতার কমতি কোথায়? থার্ড টার্মিনাল চালু হলে বিমানের সক্ষমতা আরও বাড়বে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মান বাড়াতে আরও আধুনিক যন্ত্র কেনা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার জন্য বিমান প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে।’

মতবিনিময় সভায় বিমানের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) মো. ছিদ্দিকুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।