আপিলে জামালপুরের শামসুলের সাজা আমৃত্যু থেকে কমে ১০ বছরের কারাদণ্ড

সুপ্রিম কোর্ট
ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামালপুরের মো. শামসুল হক ওরফে বদর ভাইয়ের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সাজা কমিয়ে তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি শামসুল ও এস এম ইউসুফ আলী উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি ও আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া অপর তিন আসামির বিচার হয় পলাতক অবস্থায়।

ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর আপিল বিভাগে আপিল করেন শামসুল ও ইউসুফ। আপিল বিচারাধীন অবস্থায় ইউসুফ মারা যান।

জামায়াতের সক্রিয় সদস্য আইনজীবী শামসুলের করা আপিলের ওপর চলতি বছরের ১২ জুলাই আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়। গত ১৮ অক্টোবর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য তারিখ রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ রায় দেওয়া হলো।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম শুনানিতে ছিলেন। শামসুলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মো. রায়হান উদ্দিন।

রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আপিল খারিজ করে দিয়ে আপিল বিভাগ শামসুল হকের শাস্তি কমিয়ে দিয়েছেন। কেন কমিয়ে দিয়েছেন, তা পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে জানা যাবে। রায় পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে প্রয়োজন হলে আলোচনাসাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শামসুল হকের আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় শামসুলের আপিল খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। অর্থাৎ তাঁকে দোষী সাব্যস্তকরণ বহাল থাকছে। আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে শামসুলের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিলে আমৃত্যু থেকে সাজা কমে ১০ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার প্রথম রায় এটি। ২০১৫ সালের ২ মার্চ থেকে তিনি কারাগারে আছেন। অর্থাৎ তিনি সাড়ে আট বছর ধরে কারাগারে। অবশিষ্ট কারাভোগ শেষে কারাবিধি অনুসারে তাঁর মুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা থাকবে না।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুটপাট, মরদেহ গুমের পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনে রাষ্ট্রপক্ষ। পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের রায়ে তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে দুটি অভিযোগে সব আসামিকে (আটজন) আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।