গণ–অভ্যুত্থানে রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল, তাদের এখন আর কোনো আলোচনায় দেখা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে কামার আহমাদ সাইমন এ কথা বলেন। প্রথম আলোর উদ্যোগে এই গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়।
গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় শোক জানানো হয়। এ সময় সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
কামার আহমাদ সাইমন বলেন, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের মতো জটিল বিষয় নিয়ে হাস্যকর বিতর্ক টানা চলছে। কে কয়টা সিট (আসন) বিক্রি করবে, কাকে কত ভাগ দেবে। পুরো আলোচনায় গণ শব্দের কোনো প্রতিফলন নেই। গণ–অভ্যুত্থানে একদম সাধারণ মানুষ নেমেছিল। কিন্তু কোনো আলোচনায় এই মানুষগুলো নেই।
অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘোরার অভিজ্ঞতা থেকে এই নির্মাতা বলেন, এ দেশে অনেকগুলো বাংলাদেশ। একটার সঙ্গে আরেকটার পার্থক্য আছে। এই পার্থক্যগুলোকে এক করতে পারে সংস্কৃতি। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন লাগবে। কিন্তু সমস্যাগুলোও ধরতে হবে।
কামার আহমাদ সাইমন বলেন, যে রিকশাওয়ালা অভ্যুত্থানে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের তুলল, অভ্যুত্থানের পর সে রিকশা ভেঙে দেওয়া হলো। কেউ পাশে দাঁড়াল না। এ আন্দোলনে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁরা পাঁচ তারকা হোটেলে ইফতার নিয়ে যত ব্যস্ততা দেখালেন, তার অর্ধেকটাও দেখাননি এই রিকশাওয়ালাদের মতো মানুষের কাছে যেতে। এটা সাংস্কৃতিক সমস্যা। তাঁরাও দ্রুত ওই কোরাম রাজনীতিরই আরেকটা অংশ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। সেটার জন্য মুরব্বিরা দায়ী।
প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফের সঞ্চালনায় গোলটেবিলে আরও অংশ নেন লেখক ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা, তরুণ গবেষক সহুল আহমদ প্রমুখ।