তফসিল বাতিল করে সংলাপ করুন: পেশাজীবী পরিষদ

ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আয়োজিত পেশাজীবী সমাবেশ। ২৪ নভেম্বর
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ঘোষিত তফসিল বাতিল করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন পেশাজীবী নেতারা। এ জন্য তাঁরা সংলাপে বসার তাগিদ দিয়ে বলেন, আবারও একতরফা নির্বাচন হলে দেশ পুরোপুরি একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে চলে যাবে বলে তাঁরা মনে করেন।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আয়োজিত পেশাজীবী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘নির্বিচার পেশাজীবীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন বন্ধ, পেশাজীবীসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি, একতরফা নির্বাচনের তফসিল বাতিল ও নির্দলীয় সরকারের অধীন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের’ দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

সমাবেশে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি পাঁয়তারার নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করলে দেশের মানুষ তা হতে দেবে না। বিরোধী দলের সবাইকে জেলে রেখে নির্বাচনের খেলা খেলবেন, এটা হবে না।

হঠাৎ বিএনপির নেতাদের সাজা দেওয়া শুরু হয়েছে উল্লেখ করে রুহুল আমিন বলেছেন, নির্বাচনে হারতে চান না, এটা কেমন গণতন্ত্র। এই তফসিল পিছিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম বলেন, ২৮ অক্টোবর গোলযোগ বাধিয়ে বিএনপির সভা পণ্ড করে দেওয়ার পর নাটকীয়ভাবে সবাইকে বন্দী করা হলো। এরপর তড়িঘড়ি তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এই তফসিল বাতিল করে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন নিশ্চিত করে নতুন তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপিপন্থী পেশাজীবীদের এই সমাবেশ চলাকালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সমাবেশে এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক নেতা ও ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেছেন, চারদিকে পুলিশ ঘিরে রেখেছে। এমন জুলুম বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশে জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুছ বলেন, একতরফা নির্বাচন করে সরকার কোনোভাবেই পার পাবে না। সরকার সারা দেশে বিএনপির অফিসগুলোয় তালা মেরে রেখেছে। একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসা অসম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান বলেছেন, আবার একতরফা নির্বাচন হলে দেশ পুরোপুরি একদলীয় শাসনব্যবস্থায় চলে যাবে।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতা অধ্যাপক শামসুল আলম ও অধ্যাপক কামরুল আহসান, অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (অ্যাব) কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান ও জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নেতা এম এ সেলিম, শহিদ হাসান, সরকার মাহবুব আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. খুরশিদ আলম প্রমুখ।