ফুডপান্ডা বাংলাদেশে কর্মী ছাঁটাই করছে

বাংলাদেশে কর্মী ছাঁটাই করেছে ফুডপান্ডা। অনলাইনে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি ২০ কর্মীকে ছাঁটাই করেছে।

জার্মানভিত্তিক খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফুডপান্ডা ২০১৩ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে। দেশের ৬৪টি জেলাতেই তাদের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। ঘরে বসে পছন্দের খাবার পেতে করোনা মহামারির সময় ফুডপান্ডা থেকে খাবার কেনার চাহিদা বেড়ে যায়। বর্তমানে দেশে প্রায় হাজারখানেক কর্মী আছে তাদের। কিন্তু দেশের শীর্ষ এ খাবার সরবরাহের প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি তাদের কিছু কর্মী ছাঁটাই করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদ্য ছাঁটাইয়ের শিকার এক কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, কিছুদিন আগে প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে রাতে একটি ফোন আসে। পরদিন মানবসম্পদ বিভাগে দেখা করতে বলা হয় তাঁকে। পরদিন অফিসে গেলে তাঁকে ছাঁটাইয়ের কথা জানানো হয়।

ফুডপান্ডা বাংলাদেশের আরেক কর্মী প্রথম আলোকে জানান, স্থায়ী কর্মীদের ছয় মাসের মূল বেতনসহ এবং অস্থায়ী কর্মীদের দুই মাসের মূল বেতনসহ ছাঁটাই করা হচ্ছে। ছাঁটাই হওয়া কর্মীর সংখ্যা অন্তত ২০।

এসব বিষয়ে ফুডপান্ডা বাংলাদেশের কাছে জানতে চাওয়া হলে জনসংযোগ এজেন্সির মাধ্যমে লিখিত বার্তায় তারা ছাঁটাইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

লিখিত বার্তায় ফুডপান্ডা প্রথম আলোকে বলেছে, ‘চলমান অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির জন্য দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের কিছু টিমের আকার কমিয়ে আনার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমরা তাঁদের সহায়তার জন্য চেষ্টা করছি। ইনস্যুরেন্সসহ অন্যান্য সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। সহকর্মীদের হারানো আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক।’

সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রযুক্তিবিষয়ক নিউজ পোর্টাল টেক ইন এশিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফুডপান্ডা তাদের দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে। ফুডপান্ডার মূল প্রতিষ্ঠান ‘ডেলিভারি হিরো’ তাদের বার্লিনের প্রধান কার্যালয় থেকে ১৫৬ জনকে ছাঁটাই করেছে।

এর আগে বাংলাদেশের শীর্ষ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ বাংলাদেশও কর্মী ছাঁটাই করেছে। চীনের আলিবাবা গ্রুপের মালিকানাধীন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ গ্রুপের কার্যক্রম বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে রয়েছে। দারাজ গ্রুপ তাদের ১১ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা বলেছে।

৬ ফেব্রুয়ারি দারাজ গ্রুপের ওয়েবসাইটে গ্রুপ সিইও জার্কে মিকেলসন্স জানিয়েছেন, বর্তমান বাজার বাস্তবতায় তাঁরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইউরোপে চলমান যুদ্ধ, সরবরাহে ঘাটতি, মুদ্রাস্ফীতি, কর বৃদ্ধি এবং বাজারে প্রয়োজনীয় সরকারি ভর্তুকি অপসারণের কারণে এক বছর ধরে বাজারের পরিবেশ কঠিন হয়েছে।

করোনা মহামারিতে প্রযুক্তি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যবসার প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো ছিল। মহামারি শেষ হতে না হতেই রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বাধে। সব মিলিয়ে পুরো বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ কম বেশি অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এসব সংকটের কারণে গুগল, মেটা, অ্যামাজন, মাইক্রোসফট থেকে শুরু করে বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে অনেক কর্মী ছাঁটাই করেছে।

ইন্ডিয়া টুডেতে ১ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্বের প্রযুক্তি খাতে এক লাখের বেশি কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন।