প্রতারণা ও অনুমোদনহীন পানীয় বিক্রি, পাঁচ শিল্পগোষ্ঠীর মালিক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আদালতপ্রতীকী ছবি

অসত্য তথ্য দিয়ে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা ও অনুমোদন ছাড়া পণ্য বিক্রির অভিযোগে দেশের পাঁচটি শিল্পগোষ্ঠীর মালিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত) এ পরোয়ানা জারি করেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোহা. কামরুল হাসান বাদি হয়ে আজ এ মামলা করেন। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, যে পাঁচ শিল্পগোষ্ঠীর মালিক–কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, সেগুলো হলো একমি বেভারেজ লিমিটেড, প্রাণ ডেইরি লিমিটেড, মেসার্স আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, দেশবন্ধু ফুড বেভারেজ লিমিটেড ও ব্রুভানা বেভারেজ লিমিটেড।

কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নামে কোমল পানীয় বিক্রি করে আসছিল। পানীয় বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব কথা ভোক্তাদের বলছে, তাতে তাঁর মনে হয়েছে, এগুলো একধরনের ওষুধ। তিনি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে খবর নিয়ে জানতে পারেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে এসব পানীয়র অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এরপর তিনি বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনে (বিএসটিআই) গিয়ে জানতে পারেন, সংস্থাটিও এসব পণ্যের অনুমোদেন দেয়নি। এরপরই তিনি বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে মামলা করেন।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পাশাপাশি এসব পণ্যের অনুমোদনপ্রক্রিয়া ঠিকভাবে হয়েছে কি না, আগামী ৫ ও ৯ জুন তা আদালতকে জানাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান কামরুল হাসান।

এসএমসি প্লাস অরেঞ্জ ফ্লেভার ড্রিংক নামে একমি বেভারেজ, অরেঞ্জ রিভাইড ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক নামে দেশবন্ধু ফুড বেভারেজ, অ্যাকটিভ প্লাস ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক অরেঞ্জ ও লেমন ফ্লেভার্ড নামে প্রাণ ডেইরি, টারবো ইলেক্ট্রোলাইট স্পোর্টস ড্রিংক নামে আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এবং ব্রুভানা স্পোর্টস প্লাস ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক নামে পানীয় বিক্রি করছে ব্রুভানা বেভারেজ।

কামরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, অনুমোদন না নিয়েই এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। পণ্যের প্রচারে বা মোড়কে বলা হচ্ছে, এই পানীয় খেলে পানিশূন্যতা দূর হয়, রক্তচাপের জন্য উপকারী। খেলাধুলা ও ব্যায়ামের ক্লান্তি দূর করে। এটি শক্তি জোগায়, কর্মদক্ষতা বাড়ায় ও দেহে পানির পরিমাণ ঠিক রাখে। কামরুল ইসলাম বলেন, এসব পানীয়র মোড়কে বিভিন্ন রোগ নিয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে, যা নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ ও নিরাপদ খাদ্য (মোড়কাবদ্ধ খাদ্য লেবেলিং) প্রবিধানমালা, ২০১৭–এর সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।