দ্বৈত নাগরিকত্ব: আরও ৪৪ দেশের নাগরিকত্ব নিতে পারবেন বাংলাদেশিরা
বাংলাদেশিদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আরও ৪৪ দেশের নাগরিক হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের নাগরিকত্বও অব্যাহত রাখা যাবে। বর্তমানে আমেরিকা ও ইউরোপের ৫৭টি দেশের নাগরিক হলে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ পান বাংলাদেশিরা।
আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিদ্যমান ৫৭টি দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে গিয়ে সেখানকার নাগরিকত্ব নিয়েছেন, এমন অনেক বাংলাদেশি দেশের নাগরিকত্বও অব্যাহত রাখতে চান। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আরও ৪৪টি দেশ এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন এ সুবিধার আওতায় আসছে ১০১টি দেশ। অর্থাৎ এই ১০১টি দেশে নাগরিত্ব গ্রহণ করা কোনো বাংলাদেশি চাইলে দেশেও নাগরিকত্ব অব্যাহত রাখতে পারবেন।
নতুন ৪৪টি দেশের মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশের ১৯টি দেশ রয়েছে। এগুলো হলো মিসর, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, আলজেরিয়া, সুদান, মরক্বো, ঘানা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তিউনিসিয়া, সিয়েরা লিওন, লিবিয়া, কঙ্গো, লাইবেরিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ইরিত্রিয়া, গাম্বিয়া, বতসোয়ানা ও মরিশাস।
তালিকায় লাতিন আমেরিকার ১২টি দেশ রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি দেশ হলো ব্রাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, সুরিনাম, আর্জেন্টিনা, পেরু, ইকুয়েডর, চিলি, উরুগুয়ে ও গায়ানা। তালিকায় আরেকটি দেশের নাম উল্লেখ নেই।
ক্যারিবীয় অঞ্চলের ১২টি দেশ আছে নতুন তালিকায়। দেশগুলো হলো কিউবা, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, হাইতি, বাহামা, জামাইকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, ডমিনিকা, সেন্ট লুসিয়া, বারবাডোজ, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন, গ্রেনাডা এবং সেন্ট কিটস ও নেভিস। আর ওশেনিয়া মহাদেশের একটি দেশ নতুন তালিকায় রয়েছে। সেটি হলো ফিজি।
বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্যসহ তিন পদে মেয়াদ বাড়ছে
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধন) আইন, ২০২৩’–এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মূলত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ–উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে চার বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, অপরাপর সব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ–উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের মেয়াদ চার বছর। কিন্তু বিদ্যমান আইনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এসব পদের মেয়াদ তিন বছর। এটিকেও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চার বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্য সংখ্যা একটি বাড়িয়ে ৩১ জন করা হয়েছে। এর মধ্যে স্পিকার কর্তৃক মনোনীত জাতীয় সংসদের তিনজন সদস্যের মধ্যে একজন নারী সদস্য হতে হবে। আর আগে শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। এখন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও এই সিন্ডিকেটের সদস্য হবেন।
আজকের বৈঠকে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ২০২২-২০৪১’–এর খসড়াসহ আরও একাধিক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।