এডিসি হারুন যতটুকু অন্যায় করেছেন, ততটুকু শাস্তি পাবেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
ফাইল ছবি

ছাত্রলীগের দুই নেতাকে ‘থানায় নিয়ে’ নির্মমভাবে মারধরের ঘটনায় ডিএমপির রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ ‘যতটুকু অন্যায় করেছেন, ততটুকু শাস্তি পাবেন’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

আজ রোববার দুপুরে ঢাকার আফতাবনগরের পাসপোর্ট অফিসের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ঢাকা পূর্ব (আফতাবনগর) ও ঢাকা পশ্চিম (মোহাম্মদপুর) এবং পাসপোর্ট বাতায়নের (কল সেন্টার) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

দুই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা যে করেছে, পুলিশ হোক, যে-ই হোক, যে অন্যায় করে তার শাস্তি অবশ্যই হবে। কেন করেছে, কী করেছে, আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করি। তাঁর এই পুরো কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে জবাবদিহি করতে হবে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে গত শনিবার রাতে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধর করা হয় বলে নেতাদের অভিযোগ।

ঘটনার পর আজ রোববার দুপুরে এডিসি হারুনকে ডিএমপির রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করে দাঙ্গা দমন বা পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।

এডিসি হারুন বিভিন্ন সময় সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও সহকর্মীদের মারধর করেছেন, এসব ঘটনা ঘটিয়ে তিনি কখনোই বিচারের মুখোমুখি হননি—এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই ঘটনাটি প্রথম উল্লেখযোগ্যভাবে এসেছে। আমরা এটা দেখে নিই। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, অবশ্যই তিনি যতখানি অন্যায় করেছেন, ততখানি শাস্তি তিনি পাবেন।’

আরও পড়ুন

মারধরের শিকার হয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ। এই দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী ও তাঁদের সহপাঠীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ তাঁদের শাহবাগ থানায় নিয়ে বেদমভাবে পিটিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও হারুনের সঙ্গে পুলিশের ১০-১৫ জন সদস্য মিলে তাঁদের পেটান।

পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সংযুক্ত ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশিদ
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ সূত্র জানায়, এডিসি হারুনের সঙ্গে শাহবাগের একটি হাসপাতালে পুলিশের একজন নারী কর্মকর্তা আড্ডা দিচ্ছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী হাজির হন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন সেখান থেকে চলে যান।

ঘটনার পরে পুলিশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের শাহবাগ থানায় ডেকে নিয়ে মারধর করে। পুলিশের মারধরে আহত ছাত্রলীগের দুই নেতার একজন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আরেকজন চিকিৎসা নিয়ে হলে ফিরে গেছেন।

সূত্র জানায়, ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন

‘বরখাস্ত ডিএজির দূতাবাসে যাওয়া হাস্যকর’

বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া সম্প্রতি মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে নিরাপত্তা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা ওনার কাছেই জিজ্ঞাসা করবেন। আমার কাছে মনে হয়, এটা হাস্যকর জিনিস করেছেন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা তাঁকেই জিজ্ঞাসা করবেন, বাংলাদেশের মানুষ কি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে? আর উনি একটা এত বড় দায়িত্বে থেকে কীভাবে এই কথা বললেন? এটা তাঁকেই জিজ্ঞাসা করবেন।’