থ্যালাসেমিয়া নিয়ে বছরে ৭ হাজার শিশুর জন্ম হয়

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের ৫০ শয্যা হাসপাতালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। ঢাকা, ০৭ মেছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। আর প্রতিবছর ৭ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নেয়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস এবং বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের ৫০ শয্যা হাসপাতালের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ও থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মনজুর মোরশেদ একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন। সেখানে তিনি জানান, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তের রোগ। মানবকোষে রক্ত তৈরি করার জন্য দুটি জিন থাকে। কোনো ব্যক্তির রক্ত তৈরির একটি জিনে ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসেমিয়া বাহক বলে। আর দুটি জিনেই ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসেমিয়া রোগী বলে। সব বাহকই রোগী হন না। দেশে ৬০ হাজারের বেশি থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছেন।

আরও পড়ুন

অধ্যাপক মনজুর মোরশেদ আরও বলেন, শিশু জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে। এই রোগের লক্ষণগুলো হলো ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ঘন ঘন রোগসংক্রমণ, শিশুর ওজন না বাড়া, জন্ডিস, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি।

সেমিনারে জানানো হয়, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধযোগ্য। স্বামী-স্ত্রী দুজনই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে তখনই সন্তানের এ রোগ হতে পারে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী দুজনের একজন যদি বাহক হন এবং অন্যজন সুস্থ হন, তাহলে কখনো এ রোগ হবে না। তাই বিয়ের আগে হবু স্বামী বা স্ত্রী থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না, তা সবারই জেনে নেওয়া দরকার। এ জন্য বিয়ে নিবন্ধনের সময়ে থ্যালাসেমিয়া আছে কি না, বিষয়টি দেখা যেতে পারে। বাহকদের মধ্যে বিয়ে বন্ধ করে সাইপ্রাস, ইতালি ও গ্রিসের মতো দেশ থ্যালাসেমিয়া রোগী প্রায় শূন্যে নামিয়ে এনেছে।

সঠিক চিকিৎসা ও পরিচর্যা পেলে থ্যালাসেমিয়া রোগী সুন্দর জীবন যাপন করতে পারেন। এই রোগের চিকিৎসায় সরকারকে ভর্তুকি দেওয়ার আহ্বান জানান অধ্যাপক মনজুর মোরশেদ।

সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মনিলাল আইচ বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসায় নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন হয়। আগে রক্ত পাওয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি ছিল। এখন সন্ধানীর মতো কিছু সংগঠনের কারণে সে ভীতি কেটে গেছে।

যাত্রার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের পরিস্থিতি তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির মহাসচিব আবদুর রহিম। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে তাঁরা ৮ শয্যার হাসপাতাল চালু করেছিলেন। এখন তাঁদের ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল চালু হলো। ফাউন্ডেশনে ৭ হাজার ৬০০-এর বেশি মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে অনেকেই বিনা মূল্যে সেবা পেয়েছেন।

আরও পড়ুন