ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগ অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিতে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময় পেল দুদক

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ঋণ নিয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময় পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

‘ইসলামী ব্যাংকে “ভয়ংকর নভেম্বর”’ শিরোনামে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত ৩০ নভেম্বর ‘এস আলম গ্রুপ একাই আইবিবিএল (ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড) থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ তুলেছে’ শীর্ষক প্রতিবেদন ইংরেজি দৈনিক নিউ এজে ছাপা হয়। এসব প্রতিবেদন নজরে আসার পর গত বছরের ৪ ডিসেম্বর আদালত স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন।

গণমাধ্যমে আসা ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুদক ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) চার মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ৬ এপ্রিল প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য দিন রাখেন। কমিশন তিন সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করেছে জানিয়ে গত ৬ এপ্রিল দুদকের আইনজীবী এক মাস সময়ের আরজি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৯ মে শুনানির পরবর্তী দিন রাখেন।

অনুসন্ধান শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে অংশীজনদের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে গত ৯ মে আদালতকে জানান দুদকের আইনজীবী। এরপর আদালত ১১ জুলাই দিন রাখেন। ধার্য তারিখে দুদক ও সিআইডির পক্ষ থেকে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৪ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি ওঠে।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘একটি কমপ্লায়েন্স (প্রতিবেদন) দিয়েছি, বেশ কিছু তথ্য–উপাত্ত পেয়েছি।’ আদালত বলেন, এটি স্থগিত হয়েছে কি? তখন খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘না। কমিশনের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। অবকাশ শেষে আদালত খোলার (৮ অক্টোবর) পর দিন।’ পরে আদালত ২৯ অক্টোবর দিন রাখেন।

প্রথম আলোয় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুয়া ঠিকানা ও কাগুজে দুই কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে দুই হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে একটি অসাধু চক্র। সব মিলিয়ে নানা উপায়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে চলতি বছরেই (২০২২) এ অর্থ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ তুলে নেওয়া হয় চলতি মাসের (২০২২) ১ থেকে ১৭ নভেম্বর। যার পরিমাণ ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। একইভাবে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকেও ২ হাজার ৩২০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে এ কোম্পানিগুলো। ফলে এ তিন ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদসহ দেনা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা।