ই-সিগারেটের ব্যবহার ও বিক্রি বন্ধে পদক্ষেপ নিতে আইনি নোটিশ

ই–সিগারেট
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ই-সিগারেটের আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আইনসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্যসচিব, তথ্যপ্রযুক্তিসচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির আজ সোমবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ওই নোটিশ পাঠান।

নোটিশে ই–সিগারেট তৈরি, সংরক্ষণ, বিপণন, বাণিজ্যিকীকরণ, আমদানি ও ব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ফেসবুক, ইউটিউব, লিংকডইন, টুইটার, বিভিন্ন ওয়েবসাইট, অনলাইন প্রতিষ্ঠানসহ সব মাধ্যমে ই–সিগারেটের বাণিজ্যিকীকরণ ও বিজ্ঞাপন প্রদর্শন রোধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ব্যর্থ হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আদালতে যথাযথ আইনি কার্যধারা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুসরণ করে ব্রাজিল, সিঙ্গাপুর, চীন, ভুটান, হংকং, জাপান, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, ভুটান, ভারতসহ বিশ্বের অন্তত ৪৭টি দেশ এই সিগারেটের উৎপাদন, বিপণন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। বহু দেশে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া চলছে।  

নোটিশের ভাষ্যমতে, সাধারণ সিগারেটের বিকল্প হিসেবে ইলেকট্রনিক সিগারেট বা ই-সিগারেট আজকাল তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফাইবার বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ব্যাটারিচালিত এই যন্ত্রের ভেতর একটি প্রকোষ্ঠ থাকে। এর মধ্যে ভরা থাকে বিশেষ ধরনের তরলের মিশ্রণ। যন্ত্রটি গরম হয়ে তরলে বাষ্পীভবন ঘটায় এবং ব্যবহারকারী সেই বাষ্প ফুসফুসে টেনে নেন, যা ধূমপানের অনুভূতি দেয়। এই পদ্ধতিকে বলে ‘ভেপিং’। অতি দ্রুত তরুণ সমাজ ই–সিগারেটে আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।

আমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণার বরাত দিয়ে আইনি নোটিশে বলা হয়, ই-সিগারেটে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ে ৭১ শতাংশ পর্যন্ত। কণ্ঠনালি ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় যথাক্রমে ৫৯ ও ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। এর ফ্লেভারিং এজেন্টের (সুগন্ধ যুক্তকারী উপাদান) কারণে শ্বাসতন্ত্র, লিভার ও কিডনির দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি বাড়ে। শুধু তা–ই নয়, ই-সিগারেটের নিকোটিন গর্ভজাত শিশুর মেধা বিকাশ ও গর্ভবতী মায়েদের জন্যও বিপজ্জনক। সিগারেটের ধোঁয়া এবং যন্ত্রে রক্ষিত লিকুইড শিশুদের জন্য হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত ভয়ংকর। এটি ব্যবহারকারীসহ অন্যদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।