সিঙ্গাপুর ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হলো আইএলওর আঞ্চলিক বৈঠক

এপিআরএমের সমাপ্তি ঘোষণা অনুষ্ঠানে আইএলওর মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হংবো ও সিঙ্গাপুরের জনশক্তিবিষয়ক মন্ত্রী ট্যান সি লেংছবি: আইএলওর ওয়েবসাইট

সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার ও মর্যাদাপূর্ণ কাজ নিশ্চিত করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে এ অঞ্চলের সরকার, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

এই লক্ষ্য অর্জনে অঙ্গীকার পূরণের জন্য সিঙ্গাপুর ঘোষণার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার দুপুরে শেষ হলো আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৭তম বৈঠক।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা সংগঠিত হওয়ার অধিকার এবং সম্মিলিত দর–কষাকষির অধিকারের কার্যকর স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে শ্রমিকের সুরক্ষা দিতে সরকার ও সামাজিক অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

আইএলওর উদ্যোগে সিঙ্গাপুরের একটি কনভেনশন সেন্টারে গত মঙ্গলবার চার দিনের ওই বৈঠক শুরু হয়। সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট হালিমাহ ইয়াকুব বৈঠকের উদ্বোধন করেন। বৈঠকে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও আরব বিশ্বের ৩৫ দেশের সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশসহ ২২টি দেশের শ্রমমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা।

শ্রম সংস্থার মহাপরিচালক সিঙ্গাপুর ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে এতে সদস্যদেশগুলোর জাতীয় পর্যায়ে পদক্ষেপ নিতে এক অভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

বৈঠক শেষে ঘোষণায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও আরব দেশগুলোয় কর্মসংস্থানের বিদ্যমান ও নতুন চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে সেগুলো মোকাবিলার অগ্রাধিকার ঠিক করা হয়েছে।

বৈঠক শেষে প্রচারিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, কোভিড–১৯ এই অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য এক অভূতপূর্ব সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। কারণ, মহামারির কারণে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন। পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে ব্যবসা আর জীবিকা। পরিস্থিতি সামলে ওঠার ইঙ্গিত থাকলেও জলবায়ুসংক্রান্ত প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং খাবার ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি শ্রমবাজারে সংকট সৃষ্টি করেছে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং আরব বিশ্বের দেশগুলোর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে ঘোষণায় জাতীয় পর্যায়ে পদক্ষেপ নিতে বেশ কিছু অগ্রাধিকারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব অগ্রাধিকারের সবার ওপর রয়েছে আইএলওর মৌলিক সংবিধানগুলোর অনুসমর্থন ও কার্যকর সামাজিক সংলাপ নিশ্চিত করার স্বার্থে সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সামর্থ্য বৃদ্ধির বিষয়।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা সংগঠিত হওয়ার অধিকার এবং সম্মিলিত দর–কষাকষির অধিকারের কার্যকর স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে শ্রমিকের সুরক্ষা দিতে সরকার ও সামাজিক অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সিঙ্গাপুর ঘোষণায় নারী–পুরুষের বৈষম্য বিলোপ করার পাশাপাশি এতে সদস্যদেশগুলোকে আন্তর্জাতিক শ্রমমানগুলো অনুসমর্থন ও আরও কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য সদস্যদেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া ঘোষণায় অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতিতে যুক্ত করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা ও অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষার স্বার্থে সুশাসনের রূপরেখা শক্তিশালী করতে সদস্যদেশগুলোকে উৎসাহিত করা হয়েছে।