এক যুগ আগে জামায়াত কর্মীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও পুলিশের ৩০ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা
এক যুগ আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের ৩০ সদস্যসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় জামায়াত কর্মী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া মামলাটি দায়ের করেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম আজম।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, দুদকের সাবেক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, সাবেক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান, রানা দাশ গুপ্ত, আবদুর রহমান হাওলাদার, তুরিন আফরোজ, সাবিনা ইয়াসমিন খান, মোখলেছুর রহমান, জাহিদ ইমাম, তাপস কান্তি বল, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি আবদুল্লাহ আবু, হেমায়েত উদ্দিন, শেখ হাসিনার সাবেক প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান, সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্ত ও মুন্নী সাহাকে আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান, শেরেবাংলা নগর থানার তৎকালীন ওসি আবদুল মুমিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মারুফ আহম্মেদ, এসআই মছিউর রহমান, কামাল হোসেন, জহিরুল ইসলাম, শেখ মফিজুল ইসলাম, শামসু রহমান, সফিউদ্দিন, এএসআই আসাফুদ্দৌলা, মহিউদ্দিন, ইব্রাহীম শেখ, শাহজাহান, আবু হানিফ মণ্ডল, রুস্তম আলী, আল মামুন, দেলওয়ার হোসেন, মনির হোসেন, কনস্টেবল ইউনূস আলী, আবুল হাশেম, গোলাম মোস্তফা, মো. বশির, মঞ্জুরুল হক, মাহবুবুর রহমান, হাবিবুর রহমান, আইয়ুব আলী ও কুতুব উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি-জামায়াতের হরতাল কর্মসূচি ছিল। সেদিন রাজধানীর ফার্মগেটে তেজগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ সাদাপোশাকে পুলিশ জামায়াত-শিবিরের মিছিলে নির্বিচার গুলি চালায়। পরে জামায়াত কর্মী আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াসহ (মামলার বাদী) ১১ জনকে শেরেবাংলা নগর থানায় ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। ওই থানায় পুলিশ বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করে।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, শেরেবাংলা নগর থানার একটি মামলায় আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, ফাহাদ ও মহিন উদ্দিনের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। পরে মিথ্যা জব্দ তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর সুষ্ঠু তদন্ত না করে ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ২০১৩ সালে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। একইভাবে অন্য দুটি মামলায় পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত না করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শেরেবাংলা নগর থানার ভেতরে আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার বাঁ পায়ে গুলি করেন ওই থানার তৎকালীন ওসি আবদুল মমিন। এতে আলমগীর হোসেন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাঁকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়। পরে তাঁর বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়েছিল।