পরীক্ষায় জালিয়াতি: মেয়েকে সংসদ সদস্যের স্ত্রীর ছাড়িয়ে নেওয়ার ঘটনায় টিআইবির ক্ষোভ

ছবি: সংগৃহীত

নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক হওয়া মেয়েকে প্রভাব খাটিয়ে সরকারদলীয় সংসদ সদস্যের (এমপি) স্ত্রীর ছাড়িয়ে নেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ ঘটনায় জড়িত সবার বিচার দাবি করেছে সংস্থাটি। আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।  

গত শুক্রবার বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলার সময় জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ১৯ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়। পরে তাঁদের নেওয়া হয় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কার্যালয়ে। এর মধ্যে ১৮ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু উম্মে হামিদা নামে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। উম্মে হামিদা বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবং বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমানের স্ত্রী শিল্পী বেগমের আগের সংসারের মেয়ে।

অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার দিন ডিবি কার্যালয়ে যান সংসদ সদস্য মজিবর রহমানের স্ত্রী শিল্পী বেগম। রাত ১০টার পর উম্মে হামিদাকে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনাকে জনপ্রতিনিধি ও তাঁদের স্বজনদের ক্ষমতার অপব্যবহারের স্বাভাবিকীকরণের নিয়মিত উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছে টিআইবি। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আইন সবার জন্য সমান হওয়ার কথা থাকলেও এ ঘটনা প্রমাণ করে দেশে ক্ষমতাশালীরা চাইলেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে পারেন। কেননা, একই মামলায় আটক অন্য অভিযুক্তদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় ধাপে ধাপে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অন্যায় করা হয়েছে বলেও মনে করে টিআইবি। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি প্রথম অপরাধ। এরপর অভিযুক্ত মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংসদ সদস্যের স্ত্রী একদিকে যেমন পরীক্ষায় জালিয়াতি করাকে অন্যায় সমর্থন জুগিয়েছেন, তেমনি প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করায় সমানভাবে অপরাধী।

অন্যদিকে সংসদ সদস্যের স্ত্রীর হস্তক্ষেপ মেনে নিয়ে আইনবহির্ভূতভাবে প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িতরাও একই মাত্রায় আইন লঙ্ঘন করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

জনপ্রতিনিধি ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে ‘সংসদ সদস্য আচরণ আইন’ প্রণয়ণের দাবিও জানিয়েছে টিআইবি।