>দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন
সড়কের পিচ, পাথর, খোয়া ও ইট উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। এ রকম উঁচু-নিচু ও ভাঙাচোরা সড়কে যানবাহন চলে হেলেদুলে। ৩০ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা।
এ অবস্থা সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার-ছাতক সড়কের সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার অংশের। এই সড়কের দূরত্ব ২৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলার কাটাখালী বাজার পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার ভাঙাচোরা।
ধনপুর গ্রামের আইয়ুবুর রহমান বলেন, পাঁচ বছর আগে একবার এই সড়ক সংস্কার করা হয়েছিল। এরপর আর কাজ হয়নি। গতবারের বন্যায় সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুর রহমান বলেন, ‘সড়কটি একসময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে ছিল। ২০১৪ সালে সুনামগঞ্জ থেকে কাটাখালী বাজার পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমাদের অংশে সমস্যা নেই, এবারও কাজ হয়েছে। এখন সওজ বিভাগ বলতে পারবে, তাদের অংশের কাজ কবে হবে।’
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, দোয়ারাবাজারের জালালপুর গ্রাম থেকে কাটাখালী বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার এবং সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শান্তিপাড়া গ্রামের সেতু থেকে ব্রাহ্মণগাঁও পর্যন্ত অবস্থা বেশি খারাপ। কোনো কোনো স্থানে সেতুতে ওঠার সংযোগ সড়ক দেবে গেছে। সেতুতে উঠতে হয় যাত্রীদের নামিয়ে। কোথাও আবার সেতুর সংযোগ সড়কের পাশের মাটি সরে গেছে। সড়কের অচিন্তপুর, ধনপুর, শেখেরগাঁও, মাইজবাড়ি ও মনোহরপুর এলাকায়ও খানাখন্দ রয়েছে।
জালালপুর গ্রামের আরব আলী বলেন, ‘কারে খইতাম, বড় বড় অফিসাররা এই সড়ক দিয়া আইন-যাইন। তারা ইতা দেখইন নানি। ইলা খারাপ সড়ক এলাতাক আর নাই।’
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত দোয়ারবাজারে যাতায়াত করেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলোঘর এলাকার সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। সঙ্গে ভোগান্তি তো আছেই।’
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জাকির হোসেন বলেন, ভাঙা সড়কের কারণে গাড়ি প্রায়ই নষ্ট হয়। কয়দিন পরপর গাড়ি মেরামত করাতে হয়। এতে টাকা নষ্ট হয়। বৃষ্টির দিনে গাড়ি চালাতে সমস্যা হয় বেশি।
দোয়ারাবাজারের পাণ্ডারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা আজিজ বলেন, ‘দোয়ারাবাজারের মানুষের জেলা শহরে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। সময় কম লাগায় ছাতক উপজেলার লোকজনও এই সড়ক দিয়ে জেলা শহরে যাতায়াত করেন। কিন্তু সড়কের বেহাল দশার কারণে দুই উপজেলার লোকজন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। সড়কটি নিয়ে উপজেলার মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় কথা বলেছি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা শুধু আশ্বাস দেন, কাজ আর হয় না।’
সুনামগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই সড়ক সংস্কারে আমাদের আপাতত কোনো প্রকল্প নেই। তবে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে কিছু কাজ হবে। পরে পুরো কাজের জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হবে।’