হাউজিংয়ের ভেতরে বেহাল সড়ক

মোহাম্মদপুর ও এর আশপাশে নতুন অনেক আবাসিক এলাকা গড়ে উঠছে। এসব আবাসিক এলাকার কয়েকটি সড়কের অবস্থা চলাচলের একেবারে অনুপযোগী। এর মধ্যে নবীনগর হাউজিং, সাত মসজিদ হাউজিং ও চাঁদ উদ্যান হাউজিংয়ের সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ।
এ এলাকাগুলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এই ওয়ার্ডেরই অন্তর্ভুক্ত মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শিয়া মসজিদ পর্যন্ত বাঁশবাড়ি সড়কটিরও জায়গায় জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙাচোরা সড়কে যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। কয়েক মিনিটের পথ পাড়ি দিতে দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
গত কয়েক বছরে শিয়া মসজিদ থেকে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের অংশে বেশ কিছু হাউজিং গড়ে উঠেছে। একসময় জনবসতি কম থাকলেও বর্তমানে এসব এলাকায় লাখো লোকের বসবাস। জনবসতি বাড়লেও এসব হাউজিংয়ের সড়কগুলোর উন্নয়ন তেমন হয়নি। সড়কগুলোতে বাতি না থাকায় সন্ধ্যা হলেই এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়।
সাত মসজিদ হাউজিংয়ের প্রধান সড়কটির অবস্থা চলাচলের অনুপযোগী। এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, এলাকায় নতুন অনেক বাড়ি হয়েছে। বাসিন্দার সংখ্যা আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে। অথচ গত ১০-১২ বছরে একবারও সড়কগুলো সংস্কার হয়নি। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরে দুই বছর হতে চললেও সংস্কারে কোনো উদ্যোগও নেওয়া হয়নি।
নবীনগর হাউজিং, সাত মসজিদ হাউজিং ও চাঁদ উদ্যান হাউজিংয়ের সড়কগুলো খুব বেশি প্রশস্ত নয়। সড়কগুলোতে নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে থাকে। সড়কের গর্তে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসীকে পথ চলতে হচ্ছে। সড়কে বাতি না থাকায় রাতে চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শিয়া মসজিদ পর্যন্ত বাঁশবাড়ি সড়কটির অবস্থাও বেহাল। গতকাল রোববার দেখা যায়, সড়কটির মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড প্রান্তে বটতলা, সাত গম্বুজ মসজিদের সামনে, বাঁশবাড়ি নগর মাতৃসদনের সামনে, শিয়া মসজিদ কাঁচাবাজারের সামনেসহ কয়েক জায়গায় ছোট-বড় গর্ত। পিচ উঠে যাওয়ায় রাস্তা এবড়োখেবড়ো হয়ে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন ইট বিছিয়ে গর্ত ভরাট করেছিলেন, কিন্তু সেগুলো সরে গিয়ে আবারও গর্ত বেরিয়ে পড়েছে।
এ বছরের জুনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় যানজট নিরসন ও সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়নে ১ হাজার ২৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ২০৪ দশমিক ৮২ কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়ন, ২৬৭ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ১১৯ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুর এলাকার প্রতিনিয়ত বিস্তার হচ্ছে। নতুন হাউজিং হচ্ছে। সড়ক উন্নয়নে সিটি করপোরেশনের তিন বছরের যে মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সে তালিকায় এসব হাউজিংয়ের সড়ক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগামী বছর এই মেগা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে এসব সড়ক সংস্কার করা হবে।