বন্দর লুটেপুটে খাচ্ছে চারজন!

চার ব্যক্তি বন্দর লুটেপুটে খাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের ৫ নম্বর ফটকের সামনে অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। এই চারজন পদ-পদবি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দরকে কুক্ষিগত করতে চাচ্ছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
চট্টগ্রামের সাবেক এই মেয়র তাঁর বক্তৃতায় চারজনের নামও উল্লেখ করেছেন। তাঁরা হলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের সাংসদ এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী এবং বন্দরের কনটেইনার জেটি পরিচালনায় নিয়োজিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন।
বন্দরে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর ব্যবসা রয়েছে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের। সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড বন্দরের চারটি জেটি পরিচালনা করে। সাংসদ এম এ লতিফ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। আর সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
সাবেক মেয়রের তোলা অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু রিং হলেও ফোন ধরেননি তিনি। পরে তাঁর মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর মুঠোফোনে প্রথমে কল করা হয়। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তিনিও সাড়া দেননি। আর সাংসদ এম এ লতিফের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাবেক মেয়রের অভিযোগ ঠিক নয়। কারণ, সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড সরকারি আইনকানুন মেনেই বন্দরে ব্যবসা করছে।’
এদিকে সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল সকালে নগরের বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে মিছিল বের করেন শ্রমিকেরা। কয়েক হাজার শ্রমিক অংশ নেন। পরে তাঁরা সমাবেশস্থলে যান। ডক বন্দর শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন আয়োজিত এই সমাবেশে চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র বলেন, ‘ধান্দাবাজরা চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে ধান্দা করে চলেছে। অথচ শ্রমিকেরা ন্যায্য মজুরি পায় না।’
শ্রমিক সমাবেশে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বন্দর অচল করে দিতে চাই না। বন্দরকে সচল রাখার জন্য যা কিছু করা দরকার তা অবশ্যই করা হবে। আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী।’ তিনি বলেন, শ্রমিকদের অধিকার বঞ্চিত করার জন্য স্বার্থান্বেষী মহল শ্রমিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। বিভাজনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
ডক বন্দর শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল আহাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জহুর আহমদ, ডক শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসকান্দর মিয়া, মার্চেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মীর নওশাদ প্রমুখ।